CPM

টালা থানার প্রাক্তন ওসির পাশে দাঁড়িয়ে সমাজমাধ্যমে মন্তব্য! সিপিএম নেত্রীর কাছে ব্যাখ্যা চাইল জেলা কমিটি

বিশ্বক মুখোপাধ্যায় নামের এক পুলিশ আধিকারিকের পোস্টে গিয়ে কলকাতার একমাত্র সিপিএম কাউন্সিলর টালা থানার তৎকালীন ওসির পাশে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করেছিলেন। তাই নিয়েই শুরু হয় বিতর্ক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:২৮
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

কলকাতার ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর নন্দিতা রায় ফেসবুকে মন্তব্য করে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। দলে বিতর্ক তৈরি হতেই রবিবার সেই মন্তব্য মুছতে হয়েছিল কলকাতার একমাত্র সিপিএম কাউন্সিলরকে। ওই ঘটনায় নন্দিতার বিষয়ে প্রাথমিক পদক্ষেপ করল সিপিএম।

Advertisement

১০৩ নম্বর ওয়ার্ডটি ভৌগোলিক ভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অধীনে। সাংগঠনিক ভাবে সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির মধ্যেই পড়ে এই এলাকা। যা সিপিএমের সাংগঠনিক এলাকা বিন্যাসে পূর্ব যাদবপুর এরিয়া কমিটির অন্তর্গত। সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক রতন বাগচী বলেন, ‘‘ওই ঘটনার বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট এরিয়া কমিটির সম্পাদককে চিঠি দিয়েছি। তাঁকে বলা হয়েছে, নন্দিতার কাছ থেকে কারণ জেনে জেলাকে জানাতে।’’ দু’এক দিনের মধ্যেই জবাব পেয়ে যাবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন রতন। সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক আরও বলেন, ‘‘পার্টির অবস্থান খুব পরিষ্কার। আমরা মনে করি টালা থানার তৎকালীন ওসি এবং সন্দীপ ঘোষ প্রমাণ লোপাটে যুক্ত। সেই মতোই পার্টি যা বার্তা দেওয়ার দিয়েছে।’’

বিশ্বক মুখোপাধ্যায় নামের এক পুলিশ আধিকারিক তাঁর ফেসবুক পোস্টের ডিপি কালো করে দিয়েছেন। তার পর তিনি ফেসবুকে ইংরেজিতে লেখেন, ‘‘পুলিশের গ্রেফাতারি যে ভুল এবং তাঁর প্রতি সংহতি জানাতে অন্তত আজকের জন্য ডিপি কালো করুন।’’ সেই পোস্টে ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর নন্দিতা লেখেন, ‘‘শকিং! দ্য ওয়ে অভিজিৎদা হ্যাজ় বিন ভিক্টিমাইজ়ড…শেম।’’ যার বাংলা অনুবাদ করলে হয়, যে কায়দায় অভিজিৎ এর শিকার হয়েছেন, তা লজ্জার। নন্দিতার ওই মন্তব্যের প্রতি উত্তরে পোস্ট কর্তা বিশ্বক লেখেন, ‘‘একদম দিদি, আমরা ওঁর পাশে আছি। আশা করি আপনাদের মতো কয়েক জন ভাল মানুষ নিশ্চয়ই ওর পাশে থাকবেন।’’ এর পরে নন্দিতা আবার লেখেন, ‘‘নিশ্চয়ই। আসলে মানুষ অন্যায়কে অন্যায় বলতে ভুলে গিয়েছেন, নিজেরা হাজারো অন্যায় করলেও।’’

Advertisement

সেই স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে সিপিএমের অন্দরে। দলের মধ্যে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতে সমগ্র বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে হয় রাজ্য সিপিএমকে। আলিমুদ্দিনের এক প্রথম সারির নেতা ফোন করেন পূর্ব যাদবপুরের এক সিপিএম নেতাকে। তাঁকে বলা হয়, নন্দিতা যেন দ্রুত মন্তব্য মুছে দেন ফেসবুকের ওই পোস্ট থেকে। পার্টির নির্দেশে শেষ পর্যন্ত নন্দিতাকে মন্তব্য মুছতে হয়।

আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে নন্দিতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি অত ইংরেজি বুঝি না। সেই কারণে ওই মন্তব্য করে ফেলেছিলাম।” তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি তা হলে ইংরেজিতে লিখতে গেলেন কেন? জবাবে তিনি বলেন, “ওটাই ভুল হয়েছে।” তবে সিপিএম সূত্রে খবর, নন্দিতার বিষয়টি দল ভাল ভাবে নেয়নি। তবে দলকে এ-ও ভাবতে হচ্ছে, নন্দিতা একমাত্র কাউন্সিলর, তা-ও আবার মহিলা। ফলে দলকে বুঝেশুনেই পদক্ষেপ করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement