পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ফাইল চিত্র।
থানায় কেউ অভিযোগ জানাতে এলে অভিযোগকারীর সঙ্গে কোনও দুর্ব্যবহার নয়, বরং তাঁর সঙ্গে পেশাদারি মনোভাব নিয়ে কথা বলতে হবে। তাঁর অভিযোগ শুনতে হবে, আইন মেনে যা করার, তা-ই করতে হবে। শনিবার কলকাতা পুলিশ কমিশনারের ক্রাইম কনফারেন্সে বাহিনীর আধিকারিকদের এমনই নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। একই সঙ্গে, অজ্ঞাতপরিচয় কারও দেহ উদ্ধার হলে সেটি শনাক্ত করার বিষয়ে থানাগুলি যাতে নিজেদের তরফে সব রকম ব্যবস্থা নেয়, সেই নির্দেশও আধিকারিকদের দিয়েছেন কমিশনার। এমন দেহ উদ্ধার হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানাতে বলা হয়েছে, যাতে বিষয়টির ঠিক ভাবে তদারকি হয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দুই কিশোরের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন তাদের পরিবারের সদস্যেরা। কিন্তু অভিযোগ, বাগুইআটি থানা প্রথমে তাঁদের কথায় গুরুত্ব দেয়নি। আবার ওই দুই কিশোরের দেহ উদ্ধার হলেও সেগুলি অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মর্গে পড়ে ছিল প্রায় দু’সপ্তাহ। পুলিশের একাংশ মনে করছে, এ দিন কমিশনার ওই ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেও কলকাতা পুলিশের থানাগুলিতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, তার জন্যই সকলকে সতর্ক করেছেন। কিছু দিন আগে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিল গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল। অভিযোগ, তাদের থেকেও অভিযোগ নিতে চাননি থানার আধিকারিক। তাই কোনও অভিযোগকারী থানায় এলে তাঁর সঙ্গে যাতে সংবেদনশীল আচরণ করা হয়, সেই কথাই এ দিন বলেছেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। এক পুলিশকর্তা এ দিন জানান, অভিযোগ যা-ই হোক না কেন, থানার তরফে পেশাদারিত্বের সঙ্গে তা দেখতে হবে, যাতে অভিযোগকারী ক্ষুব্ধ না হন।
লালবাজার সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে ভুয়ো কল সেন্টার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সব বিপিও যে ভুয়ো কল সেন্টার নয়, এ দিনের বৈঠকে তার উল্লেখ করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ভুয়ো কল সেন্টার কী ভাবে চিহ্নিত করা যাবে, তা নিয়ে এ দিন আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে ভুয়ো কল সেন্টারগুলির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানাগুলিকে বলা হয়েছে।
ওই বৈঠকে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। তাঁরা এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন, এমন ঘটনায় দ্রুত তদন্ত করে চার্জশিট দিতে হবে পুলিশকে। মাঝেমধ্যেই অভিযোগ ওঠে, পুলিশের মদতেই কিছু বেআইনি নির্মাণ চলছে। পুলিশের একাংশ মনে করছে, এমন অভিযোগ যাতে আগামী দিনে পুলিশের বিরুদ্ধে না ওঠে, তার জন্যই সচেষ্ট হয়েছেন লালবাজারের কর্তারা।