অনুশ শর্মা। —ফাইল চিত্র
পেল্লায় সাউন্ড বক্স বা ডিজে বাজানো এমনিতেই নিষিদ্ধ। দুর্গাপুজোর বিসর্জন এবং কালীপুজো-দীপাবলির সময়ে যাতে সেই নির্দেশ মানা হয়, প্রতি বছর সে ব্যাপারে নির্দেশ জারি করে লালবাজার। অথচ প্রতি বছরই দেখা যায়, পুলিশি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তারস্বরে বাজছে ডিজে। ইদানীং কোনও উপলক্ষ ছাড়াই একাধিক ক্ষেত্রে ডিজে বাজানোর অভিযোগ উঠছে। শুক্রবার আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে মাসিক অপরাধ বৈঠকে পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বাহিনীর সদস্যদের আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ডিজে এবং বড় মাপের সাউন্ড বক্সের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান পুলিশেরই একটি অংশ।
লালবাজারের খবর, এ দিনের বৈঠকে কমিশনার বলেছেন, ‘‘কালীপুজোর সময়ে শব্দ-তাণ্ডব ঠেকাতে হবে। ডিজে-র আওয়াজ আটকাতে ব্যবস্থা নিতে হবে সবাইকে।’’ পাশাপাশি শব্দবাজির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন সিপি। মূলত থানার আধিকারিদের শব্দ-দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রতি বছরই পুজোর বিসর্জনে শহর থেকে শহরতলি চোখে পড়ে ডিজে-র দাপট। পুলিশের একাংশের মতে, তুলনামূলক ভাবে কম হলেও বাদ যায়নি এ বারের দুর্গাপুজো, মায় লক্ষ্মীপুজোও। অতি সম্প্রতি নোবেল জয় উপলক্ষেও কসবায় ডিজে-র তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছে। ফের যাতে এমন না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য এ দিন বাহিনীর সদস্যদের কঠোর হতে বলেছেন পুলিশ কমিশনার।
সিপি-র নির্দেশের পরে শব্দ-দৌরাত্ম্য ঠেকাতে থানাগুলির তরফে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, শহরের একাধিক থানার আধিকারিকেরা তাঁদের এলাকার ডিজে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে বলেছেন, তাঁরা যেন কোনও মতেই বড় মাপের সাউন্ড বক্স ভাড়া না দেন। একই সঙ্গে বাইরের এলাকা থেকে যাতে ডিজে ঢুকতে না পারে, তা দেখার জন্যও বলা হয়েছে থানাগুলিকে। দক্ষিণ শহরতলির এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘প্রয়োজনে ডিজে বা বড় মাপের সাউন্ড বক্স বাজেয়াপ্ত করে ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশও দিয়েছে লালবাজার।’’
পুলিশ আরও জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে পুজো কমিটির সঙ্গে পুলিশকর্তাদের কালীপুজো নিয়ে সমন্বয়-বৈঠক রয়েছে। পুজো কমিটিগুলি যাতে ওই শব্দ-দানব নিয়ে বির্সজন শোভাযাত্রা না করে, তার জন্য তাদের কাছে আর্জি জানানো হবে ওই বৈঠকে। এর সঙ্গে কালীপুজো ও দীপাবলিতে শব্দবাজির অত্যাচার বন্ধ করতে বিভিন্ন পুজো কমিটির তরফে পুলিশকে যাতে সহায়তা করা হয়, সেই আবেদনও রাখা হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।
এ দিনের বৈঠকে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোয় যে ভাবে শহরে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে তাতে তিনি সন্তুষ্ট। সূত্রের দাবি, বৈঠকে সিপি জানান, তিনি সিসি ক্যামেরায় শহরের যান চলাচলের উপরে নজর রেখেছিলেন। যানবাহনের গতি ছাড়াও সেখানে বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি তিনি লক্ষ করেছেন।