প্রতীকী ছবি।
কলকাতায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষেত্রে বড় মাথাব্যথা এখন বড়বাজার। সেই সঙ্গে কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরে থেকে প্রতিদিনই বিক্ষিপ্ত ভাবে সংক্রমণের যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেই কারণেই কলকাতা পুর এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা প্রায় প্রতিদিনই বাড়াতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার নবান্নে কলকাতা ও হাওড়ার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ। মেয়র হিসেবে তাঁর মেয়াদ এ দিনই শেষ হয়ে যায়। দু’-এক দিনের মধ্যেই কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি বৈঠক ডেকে করোনা ঠেকানোর বিস্তারিত পরিকল্পনা করতে চান বলে জানান। এ দিনই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দুই বিশেষজ্ঞ পুরসভায় গিয়ে মেয়রের সঙ্গে বিস্তারিত বৈঠক করেন। কলকাতার করোনা সংক্রমণের বিশ্লেষণ করে তাঁরা দিল্লিকে রিপোর্ট দেবেন। পুরসভাকেও তা জানানো হবে।
ফিরহাদ এ দিন বলেন, ‘‘আজও কলকাতায় ৩০ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। তার মধ্যে অনেকেই বড়বাজার, জোড়াবাগান, পোস্তার মানুষ। ফলে এখানে করোনা নিয়ন্ত্রণ করাটাই সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’’ মেয়র জানান, কলকাতায় সংক্রমণ শুরু হয়েছিল বেলগাছিয়া বস্তি, নারকেলডাঙা এলাকা থেকে। ওই এলাকাকে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ ঘোষণা করা হয়েছে। এলাকার যুবকদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ডোজ় দেওয়া হয়েছে। সংক্রমিত পরিবারগুলিকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। তার ফলও মিলেছে। গত ১৭ দিনে বেলগাছিয়া, নারকেলডাঙা থেকে নতুন কোনও সংক্রমণের খবর নেই।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডকে কেয়ারটেকার হিসাবে ৪ সপ্তাহ কাজ চালানোর অনুমতি
ছাড় পেতেই খুলল দোকান, লাগামহীন ভিড় গাড়ি-মানুষের
মেয়র বলেন, ‘‘বেলগাছিয়া মডেল অনুসরণ করেই তিলজলা, তপসিয়া, গার্ডেনরিচ, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু বড়বাজারে তা করা সম্ভব হচ্ছে না।’’ বড়বাজার-পোস্তার পরিস্থিতি নিয়ে মেয়র বলেন, ‘‘ওই এলাকায় কোনও একটি লেন বা বাইলেনে করোনা হচ্ছে, এমন নয়। বিভিন্ন ঘিঞ্জি বাড়ি থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে সংক্রমণের খবর আসছে। ফলে কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে সংক্রমণ আটকে রাখা যাচ্ছে না।’’
কেন এমন হচ্ছে?
মেয়র জানান, বড়বাজার-পোস্তা-মেছুয়া ফলপট্টি এলাকায় বাইরের লরি আসছে। সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণে আপাতত বিকল্প কোনও জায়গা দেখে লরি ঢোকা বন্ধ করা হতে পারে।
মেয়র জানিয়েছেন, প্রশাসকমণ্ডলী তিনটি ধাপে শহরে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পরিকল্পনা করবে। পজ়িটিভ রোগী এলেই মাইক্রোপ্ল্যানিংয়ের মাধ্যমে সংস্পর্শে আসা মানুষদের চিহ্নিত করা হবে। কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে লকডাউন আরও কঠোর ভাবে আরোপ করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। যাতে কোনও ভাবেই নতুন এলাকায় সংক্রমণ না ছড়ায়। আর শহরের মধ্যে চিকিৎসা পরিকাঠামো মজবুত করা এবং সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।
এ দিনও কলকাতা পুলিশের দু’টি থানার অফিসার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১১ জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হলেন বলে খবর। হাওড়াতেও সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে পুরমন্ত্রী বলেন, ‘‘হাওড়ায় কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরে সংক্রমণ তেমন ছড়ায়নি। সেটাই ইতিবাচক। কলকাতায় সংক্রমণ উত্তর কেন্দ্রিক হলেও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি অন্যত্র বোঝা যাচ্ছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)