ভোগান্তির ভয়ে ছুটির পরেও হাসপাতাল ছাড়তে নারাজ

আর জি কর, শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল ঘুরে ১ অগস্ট বাষট্টি বছরের প্রৌঢ়া স্ত্রী গীতশ্রী সাধুখাঁকে এসএসকেএমের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করিয়েছিলেন স্বামী কাশীনাথ সাধুখাঁ।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৮
Share:

এসএসকেএমের মেডিসিন বিভাগে গীতশ্রী সাধুখাঁ। নিজস্ব চিত্র

সরকারি হাসপাতালে শয্যা পাওয়া সহজ কথা নয়। এসএসকেএমে তো আরও কঠিন। তাই ভর্তি যখন করা গিয়েছে, সম্পূর্ণ চিকিৎসা করেই স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যাবেন।— প্রৌঢ়ের এমনই ধনুকভাঙা পণে বিড়ম্বনায় পড়েছেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। ফলে দু’সপ্তাহ আগে মেডিসিন বিভাগ ‘ডিসচার্জ’ লিখে দিলেও ট্রলি নম্বর সাত খালি করতে রাজি নন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা।

Advertisement

আর জি কর, শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল ঘুরে ১ অগস্ট বাষট্টি বছরের প্রৌঢ়া স্ত্রী গীতশ্রী সাধুখাঁকে এসএসকেএমের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করিয়েছিলেন স্বামী কাশীনাথ সাধুখাঁ। তাঁর দাবি, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ভর্তি করা যায়নি তাঁর স্ত্রীকে। ভর্তি সংক্রান্ত সমস্যার কথা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে জানান তিনি। সেখান থেকে বিষয়টি এসএসকেএম-এর ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনা হলে তবেই শয্যা পান প্রৌঢ়া।

কাশীনাথ জানান, মেডিসিন বিভাগে গীতশ্রীর চিকিৎসা শেষ জানিয়ে ১৬ অগস্ট ‘ডিসচার্জ’ লিখে দেন চিকিৎসকেরা। পরবর্তী চিকিৎসার জন্য ইউরোলজি এবং নেফ্রোলজি বিভাগে ‘রেফার’ করা হয় তাঁকে। কিন্তু ‘ডিসচার্জ’ নিতে কাশীনাথ বেঁকে বসায় সমস্যার শুরু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওর মূত্রথলিতে পাথর রয়েছে। ইউরোলজির চিকিৎসক দ্রুত অস্ত্রোপচার করাতে বলেছেন। আমার স্ত্রী হাঁটতে, চলতে পারে না। এই রোগীকে ইউরোলজির বহির্বিভাগে দেখিয়ে আবার ভর্তি করানো সম্ভব! অস্ত্রোপচার না করিয়ে বাড়ি ফিরব না। যা হওয়ার হবে।’’

Advertisement

দু’সপ্তাহ ধরে প্রৌঢ়কে কোনও ভাবেই তাঁর এই অবস্থান থেকে টলানো যায়নি। ওয়ার্ডের সংক্রমণ রোগীর শরীরে ঢুকলে অবস্থা সঙ্কটজনক হতে পারে, তা-ও বলা হয়েছে কাশীনাথকে। তিনি বন্ডে সই করে জানিয়েছেন, তাতে সমস্যা নেই। এরই মধ্যে তৃণমূল সাংসদ তথা আইএমএ-র সর্বভারতীয় সভাপতি শান্তনু সেনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কাশীনাথ। তাঁর চিঠি নিয়ে বুধবার দুপুরে এসএসকেএমের সুপার রঘুনাথ মিশ্রের সঙ্গে দেখাও করেন প্রৌঢ়। কাশীনাথ জানান, শুক্রবার কিছু ব্যবস্থা হবে বলে সুপার তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন। এর পরেও ট্রলি নম্বর সাতের রোগীকে ডিসচার্জ দিতে বিকেলে কাশীনাথকে ডেকে পাঠান নার্স। তিনি জানান, শুক্রবারের পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। সুপারের বক্তব্য, ‘‘এ সব ক্ষেত্রে আমরা রোগীর পরিজনেদের বোঝাই। কিছু দিন আগে ট্রমা কেয়ারেও এ ধরনের সমস্যা হয়েছিল। কাশীনাথবাবুকে অনুরোধ করেছি, শয্যা ছেড়ে দিতে, তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement