প্রতীকী ছবি।
দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুলের শৌচালয়ে সম্প্রতি অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, তিন মাস মানসিক চাপে থাকার কারণে আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্রী। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে এ বার সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলের অভিভাবকদের কাউন্সেলিং করবে শহরের একটি স্কুলের অভিভাবকদের সংগঠন।
ওই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ফোরামের তরফে নিজেদের উদ্যোগেই এই কাউন্সেলিং হবে। যে সমস্ত স্কুলে অভিভাবকদের সংগঠন আছে, তাদের নিয়ে ৭ জুলাই বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় ছাড়াও তাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা হবে। অভিভাবকদের কাউন্সেলিং কী ভাবে হতে পারে, তারও রূপরেখা তৈরি করা হবে। এ নিয়ে কয়েক জন মনোবিদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, এক সঙ্গে সমস্ত অভিভাবকদের কাউন্সেলিং যে হেতু সম্ভব নয়, তাই কয়েক মাস অন্তর সচেতনতা কর্মশালার আয়োজন করা হবে। কোন কোন অভিভাবকের কাউন্সেলিং প্রয়োজন, ওই কর্মশালায় কথাবার্তার মাধ্যমে তা জেনে নিয়ে সেই অনুযায়ী তাঁদের কাউন্সেলিং করা হবে। এ নিয়ে এক অভিভাবকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আজকের দিনে মা-বাবারা চাকরি করতে চলে যান। চাকরির নানা চাপও থাকে। ফলে ছেলেমেয়েকে সে ভাবে সময় দিতে না পারায় তাদের মনেও সন্তানকে নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। কাউন্সেলিং হলে হয়তো এই উদ্বেগ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হতে পারে।’’
শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর মতে, পরীক্ষায় ছেলেমেয়ের ভাল নম্বর পাওয়া নিয়ে অভিভাবকদের মনেও চাপ থাকে, যা প্রভাব ফেলে সন্তানের উপরে। তাই পড়ুয়াদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকদেরও কাউন্সেলিং প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল মনে করেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের নিয়ে কতটা সতর্ক হতে হবে, তা বুঝতে হবে মা-বাবাকে। সন্তানের সঙ্গে কী ভাবে মেলামেশা করলে তাদের মানসিক চাপ কমবে, তা-ও কাউন্সেলিংয়ে উঠে আসতে পারে।’’