কড়াকড়ি: কলকাতা বিমানবন্দরে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। নিজস্ব চিত্র
চিন ও হংকংয়ের পরে এ বার যুক্ত হয়েছে সিঙ্গাপুর এবং তাইল্যান্ড। ওই দুই দেশ থেকে আসা বিমানযাত্রীদের দেহে করোনাভাইরাস রয়েছে কি না, তা-ও পরীক্ষা শুরু হয়েছে শনিবার রাত থেকে। যার ফলে কলকাতা বিমানবন্দরে শুরু হয়েছে মহাযজ্ঞ।
কলকাতা ও চিনের মধ্যে এখন দিনে দু’টি করে উড়ান চলে। হংকংয়ের উড়ান রয়েছে একটি। সিঙ্গাপুরের দু’টি ও ব্যাঙ্ককের উড়ান পাঁচ থেকে ছ’টি। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য সোমবার বলেন, ‘‘যাত্রী ও বিমানকর্মী মিলিয়ে দিনে গড়ে দেড় হাজার জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে বিমানবন্দরে।’’
অধিকর্তা জানিয়েছেন, কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যে অফিসারেরা ওই পরীক্ষা করছেন, তাঁদের অতিরিক্ত দু’টি কাউন্টার দেওয়া হয়েছে। এত সংখ্যক যাত্রী সামলাতে সোমবার থেকে বহু সরকারি চিকিৎসককেও বিমানবন্দরে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্সও ২৪ ঘণ্টার জন্য বিমানবন্দরে রাখা হয়েছে। কারও দেহে করোনার সামান্যতম লক্ষণ দেখা দিলেই তাঁকে সেই অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা। যে যন্ত্রের সাহায্যে যাত্রী ও বিমানকর্মীদের থার্মাল
পরীক্ষা করানো হচ্ছে, সেই যন্ত্র আরও আনা হয়েছে।
যে বিমানকর্মীরা নিয়মিত ওই সমস্ত দেশে যাতায়াত করছেন, তাঁদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন’ (ডিজিসিএ)-এর পক্ষ থেকে সেই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। বিমানের ভিতরে মুখ ঢেকে রাখার মাস্ক ব্যবহার করা থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি নির্দেশিকা রয়েছে। কলকাতা থেকে চিনের গুয়াংঝাওয়ে যাতায়াত করে ইন্ডিগো। সংস্থার এক কর্তার কথায়, ‘‘সেখান থেকে ফিরতি উড়ানে ওঠার আগে গুয়াংঝাও বিমানবন্দরেই থার্মাল পরীক্ষা হচ্ছে। আবার কলকাতায় ফিরে বিমানবন্দরে একই পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।’’
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গত শনিবার ইউনান থেকে যে ৩২৪ জন যাত্রীকে তুলে দিল্লিতে নিয়ে এসেছিলেন ১৫ জন কর্মী, তাঁদের দিল্লির কাছে, হরিয়ানার মানেসরে ‘আলাদা’ (কোয়ারেন্টাইন) করে রাখা হয়েছে। একই ভাবে রবিবার ৩৩০ জন যাত্রীকে ভারতে নিয়ে আসা ১৫ জন বিমানকর্মীকেও একই ভাবে মানেসরে রাখা হয়েছে। ওই ৩০ জনের দলের মধ্যে আট জন পাইলট এবং ২২ জন বিমানসেবিকা রয়েছেন বলে উড়ান সংস্থা জানিয়েছে। সাত দিন মানেসরে থাকার পরে বাড়িতেও একেবারে ‘আলাদা’ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। ১৪ দিন পরে তাঁদের আবার পরীক্ষা করে শরীরে সংক্রমণ বা রোগের কোনও উপসর্গ পাওয়া না গেলে ডিউটিতে ফিরিয়ে আনা হবে বলে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে।