ছবি পিটিআই।
সংক্রমণ বাড়লেও হাওড়া পুরসভা এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা কমে গেল। গত ২৬ জুন যেখানে হাওড়ায় ৩৬টি এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জ়োন বলে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেখানে বুধবার হাওড়া পুরসভার ১৭টি এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। হাওড়া পুরসভার ৪, ১১, ১২, ২৯, ৪৫, ৪৭, ৫৭, ৫৮, ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোট ১৭টি এলাকা রাজ্য সরকারের কন্টেনমেন্ট জ়োনের তালিকাভুক্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই এলাকাগুলিতে আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে কড়া লকডাউন চালু করা হবে।
কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংলগ্ন এলাকাকে এত দিন বাফার জ়োন ধরা হচ্ছিল। কিন্তু এ বার সংলগ্ন এলাকাকেও কন্টেনমেন্টের আওতায় আনা হয়েছে। ফলে জ়োনের সংখ্যা কমলেও তার বিস্তৃতি বেড়েছে অনেকটাই।
এর মধ্যে হাওড়া শহরের মূল প্রাণকেন্দ্র হাওড়া ময়দান চত্বরের (২৯ নম্বর ওয়ার্ড) চিন্তামণি দে রোড, আরবিসি রোড, তেলকল ঘাট রোড, রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোড ও হাট লেনে কড়া লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এখানেই রয়েছে হাওড়া ময়দান, হাওড়া আদালত, পুলিশ কমিশনারেটের অফিস-সহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অফিস ও হাওড়া পুরসভা। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বিধিনিষেধ অনুযায়ী ওই এলাকায় সমস্ত সরকারি দফতর আগামী কাল, শুক্রবার থেকে বন্ধ করে দেওয়ার কথা। জিটি রোড দিয়ে যানবাহন চলাচলও বন্ধ হওয়ার কথা। যদিও রাত পর্যন্ত জেলা প্রশাসন বা পুরসভার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কিছু ঘোষণা করা হয়নি। হাওড়া ময়দান চত্বরের কয়েকটি রাস্তাকে কন্টেনমেন্ট জ়োন বলে ঘোষণা করা হলেও ময়দান চত্বর খোলা থাকবে বা সেখানে যানবাহন বন্ধ থাকবে কি না, তা-ও জানানো হয়নি। তবে পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, জরুরি পরিষেবাভিত্তিক সরকারি দফতর ছাড়া বাকি অফিস ওই এলাকায় বন্ধ থাকবে।
এ দিন প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘পুলিশকে বলা হয়েছে, যে ভাবে করোনা পর্বের প্রথম দিকে কঠোর লকডাউন করা হয়েছিল, সে ভাবেই বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। কোনও রকম শিথিলতা বরদাস্ত করা হবে না। লকডাউনের নিয়মভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে ঢোকা-বেরনোয় কড়াকড়ি করা হবে। একান্ত জরুরি না হলে কাউকে অনুমোদন দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগের লকডাউনের সময়ে হাওড়ার বেশ কিছু জায়গায় পুরসভার তরফে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। স্থানীয় দোকানের ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছিল। সেই পদ্ধতি ফের শুরু হবে।
এ দিকে হাওড়ায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার এক পুলিশ আধিকারিকের মৃত্যুর পরে আক্রান্ত হলেন হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা। পুরসভা বন্ধ না হলেও রীতিমতো আতঙ্কিত উচ্চপদস্থ পুর কর্তাদের অনেকেই। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলাশাসকের দফতর, জেলা পরিষদ, হাওড়া পুরসভা–সহ হাওড়া ময়দান চত্বরের বিভিন্ন দফতরে অনেক আধিকারিক ও কর্মীও ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন।