কড়া: রেলওয়ে পার্ক কলোনির গেটে পাহারায় মহিলা বাহিনী। নিজস্ব
লকডাউনে অকারণে জমায়েত না করার অনুরোধ করে কাজ হয়নি। লাভ হয়নি পুলিশ ডেকেও। উল্টে এলাকার বাসিন্দারা বোঝাতে গেলে ঝামেলা বেধেছে। এ বার তাই লকডাউনের নিয়ম মানাতে লাঠি হাতে ময়দানে নামলেন সোদপুরের মহিলারাই। লকডাউন ভেঙে মাঠে বা পথে আড্ডা দেওয়া বহিরাগতের দলকে লাঠি মেরে পাড়াছাড়া করছেন তাঁরা। বাইরের কেউ যাতে পাড়ায় ঢুকতে না-পারেন, তা নিশ্চিত করতে এখন রাতে পাহারা দিতেও শুরু করেছে ওই মহিলা বাহিনী।
সোদপুর স্টেশন লাগোয়া রেলওয়ে পার্ক কলোনিতে প্রায় ৭০০ জন বাসিন্দা রয়েছেন। সেখানে একটি পার্ক ও একটি কমিউনিটি হল রয়েছে। এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকদের ঠাঁই দেওয়া হয়েছে ওই কমিউনিটি হলে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই পার্কটিতে সন্ধ্যার পর থেকেই মদ-গাঁজার আসর বসাচ্ছিল কিছু বহিরাগত। পাড়ায় ভিড় বাড়লে যে ঝুঁকিও বাড়বে, সেই কথা স্থানীয়েরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি। দিন কয়েক আগে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ কয়েকটি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করে। কিন্তু এর পরেও বহিরাগতদের সান্ধ্য-আড্ডায় ছেদ পড়েনি।
করোনায় বিপাকে পড়া কয়েকটি পরিবার এবং কলোনির বয়স্ক বাসিন্দাদের সাহায্য করতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছিলেন ওই পাড়ার ৪১ জন মহিলা। বয়স্কদের ওষুধ এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে টোটোয় করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার মতো কাজ করেছেন তাঁরা। বহিরাগতদের কারণে বিপদ বাড়ছে দেখে অবশেষে ময়দানে নামেন সেই মহিলারাই। মিঠু পাল, অনন্যা ভৌমিক, রিঙ্কু নাগ বিশ্বাস, জয়ী দাস চৌধুরীরা জানাচ্ছেন, তাঁরাও প্রথমে ওই বহিরাগতদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাতে কাজ না হওয়ায় রবিবার রাতে লাঠি হাতে সটান পার্কে হানা দেন তাঁরা। রীতিমতো লাঠিপেটা করে পাড়াছাড়া করা হয় ওই যুবকদের।
ওই মহিলারা জানান, তার পর থেকেই কলোনির প্রবেশপথের সামনে পালা করে পাহারা দিচ্ছেন তাঁরা। যাতে বহিরাগতেরা ফের ঢুকতে না পারে। মিঠু বলেন, “আমরা নিয়ম মেনে চলছি। কিন্তু বহিরাগতদের থেকে কেউ আক্রান্ত হলে, এই নিয়ম মানা বিফলে যাবে। তাই এমন সিদ্ধান্ত।” রিঙ্কু জানান, শুধু নিয়ম মানাই নয়, লকডাউনের কারণে কেউ কোথাও বিপদে পড়লে তাঁরা পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন খড়দহ থানার পুলিশের দিকেও।
আরও পড়ুন: ঘরে ঢুকতে বাধা, বাঁশপেটা যুবককে