Coronavirus Lockdown

মুখ্যমন্ত্রী বললেও অতিরিক্ত ফি-র দিকে ঝোঁক

বিভিন্ন স্কুলের কর্তৃপক্ষদের একাংশ জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে তাঁরা এ বার ফি বাড়াননি। গতবারের ফি রেখে দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২০ ০৩:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

লকডাউনে স্কুলের পড়ুয়ারা যে সব পরিষেবা পাচ্ছে না, তার ফি তাদের থেকে নেওয়া যাবে না বলে শুক্রবারই বেসরকারি স্কুলগুলির উদ্দেশে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “করজোড়ে অনুরোধ করছি ফি বাড়াবেন না। বিভিন্ন এক্সট্রা ফি নেওয়া হচ্ছে। সেগুলি নেবেন না।” কিন্তু অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর এই আর্জি সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ ফি নিচ্ছে এমন কিছু খাতে যেগুলির পরিষেবা লকডাউনে পড়ুয়ারা পাচ্ছে না।

Advertisement

বিভিন্ন স্কুলের কর্তৃপক্ষদের একাংশ জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে তাঁরা এ বার ফি বাড়াননি। গতবারের ফি রেখে দিয়েছেন। কিন্তু এর পরে নতুন করে ফি কমাতে গেলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছাঁটাই করতে হবে। বেতন কমিয়ে দিতে হবে। যা আবার মুখ্যমন্ত্রী চান না।

শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানান, তাঁদের খেলাধুলো বা বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ রোজই অনলাইনে হচ্ছে। এমনকি ব্যালে নাচের বিভিন্ন মুদ্রাও অনলাইন ক্লাসে পড়ুয়াদের দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনলাইন ক্লাসে দাবা খেলাও সেখানো হচ্ছে। ক্যারাটে প্রশিক্ষণও হচ্ছে। ব্রততীদেবী বলেন, “আমরা ফি বাড়াইনি। কিছুটা কমিয়েছি। কিন্তু অনলাইন ক্লাসে যেন একঘেয়েমি না আসে, তাই খেলাধুলো, নাচগান, আবৃত্তির ক্লাস রেখেছি। কোনও শিক্ষককে ছাঁটাই করিনি। পড়ুয়ারা যে পরিষেবা পাচ্ছে সেই ফি-ই শুধু নেওয়া হচ্ছে।”

Advertisement

পড়ুয়ারা যে পরিষেবা পাচ্ছে না, সেই ফি-ও নিতে তারা বাধ্য হচ্ছে বলে স্বীকার করেছে কয়েকটি স্কুল। যেমন নিউ টাউন স্কুলের অধিকর্তা সুনীল আগরওয়াল বলেন, “সাঁতারের ক্লাস হচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু সুইমিং পুলের জল পরিষ্কার রাখার যে বিপুল খরচ, সেটা দিতে হচ্ছে প্রতি মাসে। সাঁতারের প্রশিক্ষকেদেরও বেতন দিতে হচ্ছে। এসি-র খরচ বছরের প্রথমে চুক্তি অনুযায়ী দিয়ে দিতে হয়।” সুনীলবাবুর দাবি, টিউশন ফি-এর মধ্যেই খেলাধুলো, এসি খরচ, কম্পিউটার ফি—সব ধরা আছে। টিউশন ফি তাঁরা বাড়াননি।

লা মার্টিনিয়ারের সচিব সুপ্রিয় ধর বলেন, “আমাদের স্কুলে ফি বাড়ানো হয়নি। কিন্তু এর পরে আর ফি কমানো সম্ভব নয়। আমাদের স্কুল যে চার্চের অধীনে, তার পক্ষ থেকে কলকাতার বিশপ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছেন। এ বার ফি মকুব করলে স্কুল পরিচালনায় অসুবিধা হবে।’’ তবে সুপ্রিয়বাবুর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী পরিষেবা পাচ্ছে না অথচ ফি নেওয়া হচ্ছে এমনটা তাদের স্কুলে হচ্ছে না। দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমাদের স্কুলে টিউশন ফি খুবই বাস্তবসম্মত। সেটা এ বার বাড়ানো হয়নি। কিন্তু আর ফি কমানো কার্যত অসম্ভব।”

আবার মুখ্যমন্ত্রীর আর্জিতে সাড়া দিয়ে নব নালন্দা ফি কমিয়েছে। তবে অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, পরিষেবা নেই অথচ তেমন খাতেও ফি নেওয়া হচ্ছে। ইউনাইটেড গার্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “অনেক স্কুল আছে যেখানে কম্পিউটার, খেলাধুলো কিংবা ল্যাবরেটরির জন্য আলাদা ফি নেওয়া হয় না। টিউশন ফি-র মধ্যেই সমস্ত ধরা থাকে। এ সব ক্ষেত্রে আমাদের দাবি টিউশন ফি কমাতে হবে ৫০ শতাংশ। এটা কোনও স্কুলই মানছে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement