প্রতীকী ছবি
করোনা সতর্কতায় জনজীবন নিয়ন্ত্রণ করতে অন্য ভূমিকাতেও লড়ে চলেছেন ওঁরা। এ বার সেই উর্দিধারীরাই করোনা হানায় ত্রস্ত।
গার্ডেনরিচ, জোড়াবাগান, বড়তলার পরে এ বার প্রগতি ময়দান থানা। যে থানা এলাকার অধীন রয়েছে করোনায় মৃতদের সৎকার করার ব্যবস্থা। ব্যস্ত এই থানার আধিকারিকের কোভিড পজ়িটিভ হওয়ার খবর শনিবার সামনে আসতেই চিন্তা বেড়েছে থানার পুলিশকর্মীদের মধ্যে।
প্রগতি ময়দান থানার ওই আধিকারিক অসুস্থতার জন্যে ২৪ এপ্রিল থেকে ছুটিতে ছিলেন। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাঁর জ্বর ও সর্দির উপসর্গের কথা জানান। বৃহস্পতিবার তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনিবার রাতে সেই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ওই আধিকারিক রবিবার বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর স্ত্রী, দেহরক্ষী এবং গাড়িচালককে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সোদপুরে ধৃত বিদায়ী কাউন্সিলর
লালবাজার সূত্রের খবর, এপ্রিলেই গার্ডেনরিচ থানার এক আধিকারিক করোনায় আক্রান্ত হন। বর্তমানে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িতে আছেন। জোড়াবাগান থানার এক অফিসার করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সেখানকার সাত জনকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডেরও এক কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর এক সহকর্মীকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। ওই ট্র্যাফিক গার্ডেরই আর এক আধিকারিক করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট আজ, সোমবার আসার কথা।
একের পর এক থানা থেকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আসায় বাহিনীতে যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে, মানছে লালবাজার। বাহিনীর মনোবল বাড়াতে রবিবার প্রগতি ময়দান থানার আক্রান্ত আধিকারিককে ফোন করে শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। এ দিনই তিনি থানাগুলিকে প্রতিদিন জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশকর্মীদের মাস্ক-গ্লাভস পরতেও বলেছেন। কারণ, অভিযোগ জানাতে যাওয়া বহু মানুষ স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধুয়ে থানায় ঢুকলেও সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছেই।
যদিও পুলিশবাহিনীর সুরক্ষায় শনিবারই নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা মানার পাশাপাশি মাস্ক-গ্লাভস পরা, সানিটাইজ়ার ব্যবহার ও অফিস-লিফট জীবাণুমুক্ত করতেও বলা হয়েছে। পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে পুলিশকর্মীদের কোয়রান্টিনে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ দিনই নাকা তল্লাশির সময়ে পুলিশকর্মীদের ফেস শিল্ড, গ্লাভস এবং মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে লালবাজার। তাতেও সংক্রমণ আটকানো নিয়ে ধন্দে নিচুতলার কর্মীরা। তাঁদের মতে, পথে নেমে কাজ তো করতেই হবে নিচুতলার কর্মীদের।
আরও পড়ুন: শেষ হয়ে গেল টক টু মেয়র
ট্র্যাফিকের এক কর্তা জানান, নাকা তল্লাশির সময়ে পুলিশকে অজানা ব্যক্তি বা গাড়িচালকের সংস্পর্শে আসতে হচ্ছে। এমনকি, গাড়ির নথিও দেখতে হচ্ছে। তাই রবিবারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নথি দেখার আগে গাড়িচালকের থার্মাল স্ক্রিনিং করা বাধ্যতামূলক। সেই সঙ্গে বাড়ি থেকে যাতায়াত করছেন যে পুলিশকর্মীরা, তাঁদের বাইরের গাড়িতে উঠতে নিষেধ করা হয়েছে। যে পুলিশকর্মীরা গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করেন, তাঁদের বাড়ির কাছাকাছি থাকা সহকর্মীকে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)