প্রতীকী ছবি
একে লকডাউন, তার উপরে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন ‘রেড জ়োন’ বা ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ তালিকায়। সেই কারণে প্রায় সমস্ত পাঠ্য বইয়ের দোকানই এখন বন্ধ। বন্ধ কলেজ স্ট্রিটও। স্কুলের অনলাইন ক্লাস যতই চলুক, পাঠ্য বই হাতে না পাওয়ায় ঠিক ভাবে পড়াশোনা করানো যাচ্ছে না। এমনই অভিযোগ শহরের আইসিএসই ও সিবিএসই বোর্ডের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের একাংশের। তাঁদের দাবি, পাঠ্য বইকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ঘোষণা করে কয়েকটি দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হোক। এ বিষয়ে উদ্যোগী হোক স্কুলগুলিও।
কবে খুলতে পারে পাঠ্য বইয়ের দোকান? শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলেজ স্ট্রিট খুলে গেলে বইয়ের দোকানে ভিড় হয়ে যাবে। তাই কলেজ স্ট্রিটের দোকান খোলা এখনই সম্ভব নয়। তবে গ্রিন বা অরেঞ্জ জ়োনে কিছু বইয়ের দোকান লকডাউনের নিয়ম মেনে খুলতে পারে। সেই সঙ্গে আইসিএসই ও সিবিএসই বোর্ডের স্কুলগুলিকেও বলছি, স্কুল থেকে বই বিতরণের ক্ষেত্রেও যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।’’
অভিভাবকেরা চান, স্কুলের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও এ বিষয়ে তৎপর হোক। এক অভিভাবক জানালেন, তাঁর এক আত্মীয় কেরলে থাকেন। সেই আত্মীয় জানিয়েছেন, এপ্রিল মাসে লকডাউন যখন আবার বাড়ানো হল, তখন সরকার বইয়ের কিছু দোকানকে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দু’টি দিন খোলা রাখতে অনুমতি দিয়েছিল। তাতে পড়ুয়াদের বই না পাওয়ার সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়।
আরও পড়ুন: নেই পিপিই, ঝুঁকি নিয়ে কাজ দমকলকর্মীদের
অনলাইনে পুরোদমে ক্লাস হলে পাঠ্যবইও যে পড়ুয়াদের হাতে থাকা দরকার, তা মেনে নিচ্ছেন সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি। তবে তিনি জানাচ্ছেন, লকডাউন উঠলে তবেই তাঁদের স্কুলের পড়ুয়াদের বই দেওয়া হবে। কৃষ্ণ বলেন, ‘‘এখন পাঠ্য বই না পেলেও পড়ুয়ারা ই-বুক ডাউনলোড করে পড়ছে। অনলাইন ক্লাসেও যে বিষয়ের উপরে পড়ানো হচ্ছে, তার লিঙ্ক দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
এপিজে স্কুলের প্রিন্সিপাল রীতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে কুরিয়র সার্ভিসের মাধ্যমে পড়ুয়াদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়াটাও নিরাপদ নয়। তাই বই দেওয়ার বিষয়ে লকডাউন ওঠার দিকেই তাকিয়ে আছি। এখন ই-বুক ডাউনলোডের মাধ্যমে পড়ুয়ারা পড়াশোনা করছে।’’
ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের প্রিন্সিপাল মৌসুমী সাহার কথায়, ‘‘১৭ মে যদি লকডাউন ওঠে, তার পরেই স্কুল থেকে বই দেওয়া শুরু হবে। আপাতত অনলাইন ক্লাসে ই-বুক, লিঙ্ক ডাউনলোড করে পড়াশোনার কাজ চলছে।’’ শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য অবশ্য জানিয়েছেন, কুরিয়রের মাধ্যমে তাঁদের স্কুলের কিছু পড়ুয়ার হাতে বই দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া, ই-বুক বা পিডিএফ ডাউনলোড করে পড়াশোনা তো চলছেই।
তবে রামমোহন মিশন হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল সুজয় বিশ্বাস মনে করেন, অনলাইন ক্লাসে ই-বুক ডাউনলোড করে যতই পড়ানো হোক, পাঠ্যবই হাতে নিয়ে পড়ার কোনও বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনের সব নিয়ম মেনে সোমবার স্কুল থেকে বই দেওয়ার কাজ শুরু হবে। সামাজিক দূরত্বের সব নিয়ম মেনেই অভিভাবকেরা বই নেবেন। যাঁরা এখন বই নিতে আসতে পারবেন না, তাঁরা লকডাউন খুললেই বই পাবেন।’’
আরও পড়ুন: কলকাতা পুলিশের আরও এক ওসি কোভিড আক্রান্ত
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)