প্রতীকী ছবি।
রাস্তার এক দিকে দাঁড়িয়ে ডিউটি করছেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মী। এর মধ্যেই পথ আগলে দাঁড়াল দু’টি মোটরবাইক। তাতে ছ’জন আরোহী। কারও মাথায় হেলমেট নেই। সিগন্যাল সবুজ হতেই বেপরোয়া গতিতে ছুটে বেরিয়ে গেল বাইক দু’টি।
উপরের চিত্রটি দক্ষিণ শহরতলির ঠাকুরপুকুর এলাকার। শুধু বিক্রমগড় নয়, শহরতলির বিভিন্ন ছোট রাস্তায় এমন দৃশ্য প্রায়ই দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। লকডাউন শিথিল হতেই শহরের অলিগলিতে বেপরোয়া বাইক-আরোহীদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছে। কোথাও একটি বাইকে তিন জন আরোহী, কোথাও আবার হেলমেট ছাড়াই দুর্বার গতিতে ছুটে বেড়াচ্ছেন তাঁরা।
শনিবার সকালে যাদবপুরে দেখা যায়, একটি বাইকে তিন জন আরোহী। এক জনেরও মাথায় হেলমেট নেই। তবে ট্র্যাফিক পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাননি ওই মোটরবাইকের চালক।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, বেপরোয়া মোটরবাইকের দাপাদাপি যে বেড়েছে, তা নজরে এসেছে পুলিশকর্তাদের। সেই কারণে গত বুধবার থেকে বেপরোয়া বাইক-আরোহীদের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান শুরু করেছেন ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকেরা। দিনের পাশাপাশি রাতের শহরেও লকডাউন অমান্যকারী বাইক-আরোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শনিবার রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত থানা ও ট্র্যাফিক গার্ড যৌথ ভাবে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু করেছে। গার্ডরেল দিয়ে রাস্তা আটকে ট্র্যাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, ডিসি-দের ওই অভিযান তদারক করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, দিনের অন্য সময়ে শহরের ছোট রাস্তা কিংবা অলিগলিতে যাতে বেপরোয়া মোটরবাইকের দাপট কমানো যায়, তার জন্য প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডকে নিজেদের এলাকায় পিকেট তৈরি করে তল্লাশি অভিযান চালাতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বেপরোয়া বাইক-আরোহীদের বিরুদ্ধে অভিযানে মোটরবাইক বা লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করার উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে। লকডাউনের আগে শহরে বেপরোয়া মোটরবাইকের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চললেও মাঝে সেই কাজে ছেদ পড়েছিল। আর সেই সুযোগেই বাইক-আরোহীরা শহরে ফের দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
তবে রাতের শহরে মত্ত গাড়িচালক বা বাইক-আরোহীদের আটক করা হলেও ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার ব্যবহার করা হচ্ছে না। রাতপথে মত্ত গাড়িচালকদের দাপাদাপি ঠেকাতে ওটাই পুলিশের অস্ত্র। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় আপাতত সেই পরীক্ষা বন্ধ রাখতে বলেছেন লালবাজারের কর্তারা। কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) রূপেশ কুমার জানান, কোনও চালক মত্ত অবস্থায় আছেন বলে মনে হলে তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়ে তবেই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।