রুদ্ধ: করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আবার কঠোর হল লকডাউন। বৃহস্পতিবার, হাওড়ার মল্লিকফটকে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবারই ঘোষণা করেছেন, রাজ্যে লকডাউন চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। তাঁর সেই ঘোষণার পরের দিনই হাওড়া শহরের কিছু এলাকায় ফিরল সামগ্রিক লকডাউনের পুরনো ছবি। বৃহস্পতিবারই শহরের ২৭টি কন্টেনমেন্ট জ়োনের রাস্তা গার্ডরেল ও বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেয় পুলিশ। সেই সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি। তাতে বলা হয়েছে, ওই এলাকাগুলিতে বাইরে থেকে কেউ ঢুকতে পারবেন না। সেখানকার বাসিন্দারাও বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন না। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করলে তাঁকে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হতে পারে।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে এ রাজ্যে কলকাতার পরেই রয়েছে হাওড়া। কিন্তু গত পয়লা জুন থেকে শহরে কার্যত কোনও বিধিনিষেধ ছিল না। রাস্তা-বাজারহাটে লাগামছাড়া ভিড়, দূরত্ব-বিধি না মেনে বাসে ঠেসাঠেসি করে ওঠা— এ সব ছিল নিয়মিত ঘটনা। তাই আরও এক বার লকডাউন হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনার মধ্যেই হাওড়া পুলিশের এ দিনের তৎপরতায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এ দিন থেকেই নতুন করে শুরু হয়েছে পুলিশি টহল ও ধরপাকড়। সব দেখে মানুষ যেমন কিছুটা উদ্বিগ্ন, তেমনই সংক্রমণ এড়াতে প্রশাসনের এই তৎপরতায় ভরসাও পাচ্ছেন অনেকে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে এ দিন দুপুর থেকেই ফোরশোর রোডের কাছে রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোড, পি কে ব্যানার্জি রোড, বেলুড়ের একটি গলি-সহ শহরের ২৭টি এলাকা গার্ডরেল দিয়ে সম্পূর্ণ ঘিরে দেওয়া হয়। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, কমিশনারেট এলাকায় ৮৪টি কন্টেনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে ২৭টি এলাকা বড় হওয়ায় এবং সেখানে সংক্রমণের হার বেশি থাকায় ওই এলাকাগুলি আগে ঘিরে ফেলা হল। বাকি জ়োনগুলির ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘চিহ্নিত হওয়া ২৭টি এলাকায় কড়া লকডাউন করা হচ্ছে। কাউকে বেরোতে দেওয়া হবে না। বাজার-দোকান সব বন্ধ থাকবে। ওষুধ, আনাজ-সহ অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।’’
ওই পুলিশকর্তা আরও জানান, লকডাউন থাকা সত্ত্বেও মানুষ যে ভাবে দূরত্ব-বিধি না মেনে বেরিয়ে পড়েছেন তাতে হাওড়ায় সংক্রমণ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। রাজ্য প্রশাসন থেকে কন্টেনমেন্ট জ়োনে কড়া লকডাউনের নির্দেশের পরেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘শহরে ইতিমধ্যে আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত। কয়েকটি এলাকায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ওই এলাকাগুলি চিহ্নিত করে তার তালিকা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। তারা সেই মতো ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’