ফাইল চিত্র।
সামান্য হলেও উপসর্গহীন ভাবে ফের মাথা তুলছে করোনা!
কোনও রকম উপসর্গ ছাড়াই রাজ্যের কোথাও করোনা ঘাপটি মেরে রয়েছে কি না, তা জানতে অতিমারির তৃতীয় ঢেউয়ের আগে থেকে ‘সেন্টিনেল সার্ভেল্যান্স’ শুরু করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। চলতি মাসের ১ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলা সেইসমীক্ষার রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। তাতেই দেখা যাচ্ছে, গত ১৮-২০ মে পর্যন্ত করা সমীক্ষার তুলনায় এ বারে কয়েকটি জেলায় পজ়িটিভিটি রেট বৃদ্ধি পেয়েছে।
কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ে দেখা গিয়েছিলে, ওমিক্রনেরপ্রভাবে আক্রান্ত হলেও অনেকেরই কোনও উপসর্গ নেই। কিন্তু উপসর্গহীনদের থেকে অন্য জনের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ১০০ শতাংশ। এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘উপসর্গহীন থেকে করোনাভাইরাস কোন এলাকায় কতটা প্রভাব ফেলছে, সে সম্পর্কে ধারণা পেতেই দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরে সেন্টিনেল সমীক্ষা শুরু হয়েছিল।’’
রাজ্যের ২৮টি জেলার (স্বাস্থ্য জেলা-সহ) মেডিক্যাল কলেজ কিংবা জেলা ও মহকুমা স্তরেরহাসপাতালের স্ত্রী-রোগ এবং সাধারণ শল্য চিকিৎসা বিভাগে ভর্তি হওয়া রোগী, যাঁদের কোনও রকমের উপসর্গ নেই, তাঁদের উপরেই নির্দিষ্ট সময়কালে এই সমীক্ষা করা হয়। প্রতিটি হাসপাতাল থেকে ৪০০টি করে নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে ২৮টি হাসপাতাল মিলিয়ে ১০,৯৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট ২৭ জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তৃতীয় দফার সেন্টিনেল সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় দফায় বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার পজ়িটিভিটি রেট ০.৭৬ থাকলেও এ বার তা ১-এর উপরে রয়েছে। বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালের ৪৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় পাঁচ জনের পজ়িটিভ এসেছে, অর্থাৎ, পজ়িটিভিটি রেট ১.১৬ শতাংশ। দ্বিতীয় দফার সমীক্ষায় কোনও জেলাতেই ১-এর উপরে পজ়িটিভিটি রেট ছিল না। আবার ০.৫ থেকে ১-এর মধ্যে পজ়িটিভিটি রেট রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (০.৯৯), নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা (০.৭৮), পূর্ব মেদিনীপুর (০.৭৩) ও পশ্চিম বর্ধমানে (০.৫)। দ্বিতীয় দফায় মাত্র দু’টি জেলায় পজ়িটিভিটি রেট এমন (০.৫ থেকে ১-এর মধ্যে) ছিল। আর এ বারে ০ থেকে ০.৫-এর মধ্যে পজ়িটিভিটি রেট রয়েছে মোট ২৩টি জেলায়।
সমীক্ষায় আরও একটি যে বিষয় উঠে এসেছে তা হল— ২৭ জন আক্রান্তের মধ্যে ২১ জনই করোনার প্রতিষেধক নেননি। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, করোনার প্রতিষেধক নেওয়ার বিষয়ে এখনও কিছু সংখ্যক মানুষের উদাসীনতা রয়ে গিয়েছে। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘প্রতিষেধক নিলে কেউ আক্রান্ত হবেন না, তেমনটা কখনওই নিশ্চিত ভাবে বলা হয়নি। তবে প্রতিষেধক নেওয়া থাকলে, কোভিডে আক্রান্ত হলেও রোগীর ততটা সঙ্কটজনক না হওয়ারসম্ভাবনাটাই বেশি।’’