যথা পূর্বং..: ভিড়ে গাদাগাদি মাছবাজার। শুক্রবার, বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
লকডাউন ছিল শুক্রবার পর্যন্ত। কিন্তু ইদ-উল-আজহা আর উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট বিলির জন্য এ দিন তা শিথিল করা হয়েছিল। আর তাতেই ভিড়ের পুরনো চিত্র ফিরে এল বারাসত-মধ্যমগ্রামে। সাতসকালে আনাজ আর মাছের বাজারের জমায়েত দেখে বোঝা দায় যে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য দূরত্ব-বিধি মেনে চলার কোনও নির্দেশ রয়েছে! এমনকি, মাস্ক নিয়ে সচেতনতাও শিকেয় উঠেছে। এ দিকে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। কমার কোনও লক্ষণ নেই।
এরই মধ্যে মধ্যমগ্রাম থানার এক আধিকারিক-সহ দু’জন সংক্রমিত হয়েছেন। এ নিয়ে বারাসত পুলিশ জেলার মোট ২০ জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হলেন। আরও কয়েক জনের নমুনা পরীক্ষা হবে। বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সংক্রমিতেরা অধিকাংশই উপসর্গহীন।
লকডাউন চললেই জনতা গৃহবন্দি। আর একটু শিথিল হলেই পথে-বাজারে জনপ্লাবন। এমন দৃশ্য বারাসতের বাসিন্দাদের চোখ সওয়া হয়ে গিয়েছে। লকডাউন ঘোষণার আগে অন্তত তিন দিন সময় দেওয়া হয়েছিল, যাতে সকলেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুত করে নিতে পারেন। স্থানীয় বাসিন্দা সুকুমার দাসের প্রশ্ন, “যাঁরা আনাজ আর মাছের বাজারে ভিড় করলেন, লকডাউন শুক্রবার শিথিল না হলে তাঁরা কী করতেন? লকডাউন তো উঠত শনিবার। তাঁরা কি তা হলে না খেয়ে কাটাতেন একটা পুরো দিন?”
এ দিন ভোর থেকেই ভিড় শুরু হয়ে যায় বারাসতের পাইকারি বাজারগুলিতে। তার মধ্যে রয়েছে মাছের আড়তও। আনাজের পাইকারি বাজারেও ছিল প্রবল ভিড়। দু’টি বাজারেই কেউ কেউ মাস্ক পরে থাকলেও অনেকেরই তা ছিল থুতনির নীচে। পান-গুটখার পিক ফেলার জন্য কারও আবার সে বস্তুটি স্থায়ী ভাবে কানে ঝোলানো। একই ছবি দেখা গেল মধ্যমগ্রামেও। সেখানে বৃহস্পতিবার লকডাউন উঠেছে। সে দিনই রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে সেখানকার পুলিশ আধিকারিকদের।
পাইকারি বাজারে সাধারণত ব্যবসায়ীরা যান। কিন্তু খুচরো বাজারেও সচেতনতা চোখে পড়েনি। এমনকি চায়ের দোকানগুলির জটলা আশঙ্কা বাড়িয়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন লকডাউন জারি করতে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পুলিশকর্তারাও।