ঘেঁষাঘেঁষি: ট্রেনের মহিলা কামরা থেকে ওঠা-নামার সময়ে মানা হচ্ছে না দূরত্ব-বিধি। বৃহস্পতিবার, বারাসত স্টেশনে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
লোকাল ট্রেন চলতে শুরু করার প্রথম দিনেই ফিরেছিল ভিড়ে ঠাসা বনগাঁ লোকালের সেই চেনা ছবি। বৃহস্পতিবারও তার ব্যতিক্রম হল না। তবে লোকাল ট্রেন চলার দ্বিতীয় দিনে অবশ্য করোনা-বিধি নিয়ে কড়াকড়িও কার্যত উধাও বহু স্টেশনেই।এ দিন অনেক স্টেশনেই মাস্ক ছাড়া ট্রেন ধরতে আসা যাত্রীদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। যেমন, শিয়ালদহগামী বনগাঁ লোকাল ধরতে এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ মধ্যমগ্রাম স্টেশনে গিয়েছিলেন মাইকেলনগরের প্রকাশ রুদ্র। কিন্তু স্টেশনে ঢোকার মুখে পরীক্ষা করে দেখা গেল, তাঁর শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। অভিযোগ, তখন তাঁকে স্টেশনে ঢুকতে না দেওয়ায় তিনি স্থানীয় কয়েক জন যুবককে ডেকে আনেন এবং রেলকর্মীদের সঙ্গে বচসা বাধে। পরে কর্তব্যরত রেলপুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে কোথাও কোথাও আবার এর উল্টো ছবিও দেখা গিয়েছে। দত্তপুকুর, বামনগাছি, হৃদয়পুর স্টেশনের একাধিক প্রবেশপথ গার্ড রেল দিয়ে ঘেরা হলেও তা সরিয়ে দিয়েই অবাধে স্টেশন চত্বরে ঢুকেছেন যাত্রীরা। কিন্তু যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করা ছিল শুধুমাত্র স্টেশনে ঢোকার মূল প্রবেশপথেই। বাকি প্রবেশপথগুলি দিয়ে যাত্রীদের ঢোকা আটকাতে পাহারা দেওয়ার বালাইও এ দিন দেখা যায়নি।
শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বেশ কিছু স্টেশনে এ দিন একটিমাত্র টিকিট কাউন্টার খোলা থাকায় সেখানেও যাত্রীদের বিশাল লাইন দেখা যায়। এ দিন সকালে বামনগাছি স্টেশনে মাসিক টিকিটের মেয়াদ বাড়াতে এসেও কাউন্টারের সামনে বিশাল লাইন দেখে ফিরে যান মিনা ভট্টাচার্য নামে এক যাত্রী। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘একটামাত্র কাউন্টার খুলে দিলে এত যাত্রী কি সামাল দেওয়া যায়?’’ পূর্ব রেল সূত্রের খবর, লোকাল ট্রেন চালুর প্রথম দিনের ভিড়ের পরে এ দিন পরিস্থিতি সামাল দিতে মূলত অফিসের ব্যস্ত সময়ে শিয়ালদহ-বনগাঁ ও বসিরহাট শাখায় ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সকালের দিকে শিয়ালদহগামী ট্রেনে সামান্য ভিড় থাকলেও দুপরের পরে যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। তবে
বিকেল থেকে ফের বনগাঁ যাওয়ার ট্রেনে দূরত্ব-বিধি শিকেয় ওঠে। বহু কামরায় তিন জনেরআসনে চার জনকেও বসতে দেখা যায়।নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বুধবার বেশ কিছু স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে হকাররা দোকান খুলেছিলেন। এ দিন বিকেলে দোকান খোলার খবর পেয়ে দত্তপুকুর থানার পুলিশ এসে সেই সব দোকান বন্ধ করে দেয়। এ দিন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কামরায় দূরত্ব-বিধি যাতে মেনে চলা যায়, তাই ওই শাখায় ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। তবে যাত্রীদেরও এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।’’