Coronavirus in Kolkata

Coronavirus in kolkata: করোনা-বিধি ভাঙায় শহর জুড়ে ধরপাকড়, হুঁশ কি ফিরবে তাতেও?

দুর্গাপুজোর সময়ে কয়েক দিনের জন্য পুলিশি রাশ আলগা হতেই শহর জুড়ে দেখা গিয়েছিল অসচেতনতার নানা ছবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২১ ০৬:০৫
Share:

কড়াকড়ি: পুজোর পরে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। কিন্তু শহরের বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে মাস্ক পরায় প্রবল অনীহা দেখা যাচ্ছে। তাই শহর জুড়ে অভিযান চালাল পুলিশ। মাস্ক পরতে বলার পাশাপাশি করা হয় জরিমানাও। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

কোভিড সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি যখন প্রতিদিনই ভয় ধরাচ্ছে, তখন কালীপুজো ও দীপাবলির আগে মাস্কের বিধি বলবৎ করতে কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটল পুলিশ। যদিও সোমবার দিনভর শহর জুড়ে ধরপাকড় চলার পরে প্রশ্ন উঠেছে, এর পরেও নাগরিকদের একাংশ সচেতন হবেন তো? সেই সঙ্গেই আশঙ্কা, দুর্গাপুজোর মতো কালীপুজোর রাতেও ছাড় থাকায় বিধিভঙ্গের আগের ছবিটা ফিরে আসবে না তো? যদিও লালবাজারের আশা, পুলিশি ধরপাকড় বাড়ার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হবে।

Advertisement

দুর্গাপুজোর সময়ে কয়েক দিনের জন্য পুলিশি রাশ আলগা হতেই শহর জুড়ে দেখা গিয়েছিল অসচেতনতার নানা ছবি। মাস্ক ও দূরত্ব-বিধি শিকেয় তুলে দেদার ঘুরতে দেখা গিয়েছিল নাগরিকদের একটি বড় অংশকে। এর দিনকয়েক পরে শহর ও শহরতলিতে সংক্রমণের লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হলেও অসচেতনতার ছবিটা বদলায়নি। রাস্তাঘাটে বিধি ভাঙার এই লাগামছাড়া প্রবণতায় প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। সেই কারণে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে রাজ্য সরকারের তরফে নৈশ বিধি বলবৎ করার পাশাপাশি কড়া হাতে করোনা-বিধি পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়। তার পরেই রাস্তায় শুরু হয় পুলিশি কড়াকড়ি। বিনা মাস্কে ঘোরাঘুরি করতে দেখলেই জরিমানা করার পাশাপাশি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে।

পুলিশি ধরপাকড় শুরু হওয়ার পরেও অবশ্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাস্ক নামিয়ে লোকজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে। প্রশ্ন করা হলে কেউ বলছেন, প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ আবার দিচ্ছেন অদ্ভুত সব অজুহাত। সোমবার গড়িয়াহাট মোড়ে মাস্কহীন এক তরুণীকে থামাতেই কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে শুনতে হল, ‘‘দু’টো ডোজ় তো নিয়েছি। আর মাস্ক পরব কেন?’’ শুধু গড়িয়াহাট নয়, শহরের বিভিন্ন অংশেই এমন নানা যুক্তি সাজাচ্ছেন বিধি ভাঙা পথচারীরা।

Advertisement

চিংড়িঘাটা মোড়ে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘উৎসবের সময়ে একটু ছাড় পেতেই অনেকে যা খুশি শুরু করে দিয়েছিলেন! এখন কড়া নির্দেশ আছে। তাই কাউকেই আর রেয়াত করা হচ্ছে না।’’ যদিও অভিযোগ উঠেছে, এ দিন পুলিশি ধরপাকড় যেমন চলেছে, তেমনই আবার বিধি ভাঙতে দেখে পুলিশকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গিয়েছে। এ দিন ধর্মতলার কাছে মাস্ক হাতে ঘোরাঘুরি করা জনৈক সুদীপ রায়কে প্রশ্ন করতেই তাঁর উত্তর, ‘‘মাস্ক পরে হাঁটতে একটু কষ্ট হয়। তাই হাতে রেখেছি। ভিড়ে গেলে পরে নেব।’’

রবিবার রাত থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত কলকাতায় মাস্ক না পরায় ৫৩৬ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে। শ্যামবাজার, উল্টোডাঙা, রুবি, পার্ক সার্কাস, ধর্মতলা-সহ শহরের একাধিক জায়গায় বিশেষ পুলিশি নজরদারি ছিল।

কলকাতার পাশাপাশি এ দিন বিধাননগরের বিভিন্ন জায়গাতেও পুলিশি অভিযান চলেছে। বিধাননগর কমিশনারেটের নবদিগন্ত ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশ সকালের দিকে পাঁচ নম্বর সেক্টরের কলেজ মোড়ের কাছে অভিযান চালায়। অভিযোগ, সেখানে পথচারী থেকে বাসযাত্রী— অনেকেরই মাস্ক ছিল না। করোনা-বিধি অমান্য করার অভিযোগে শতাধিক জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাঁরা ৫০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান। গত দু’দিনে নৈশ বিধি উপেক্ষা করে রাস্তায় বেরোনোর অভিযোগেও অনেককে গ্রেফতার করেছে বিধাননগরের পুলিশ। এই ধরনের অভিযান এখন চলবে বলেই পুলিশের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।

কলকাতা পুলিশের তরফেও জানানো হয়েছে, সচেতনতার প্রচারের পাশাপাশি ধরপাকড় চলবে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘যেখানে যেমন দাওয়াই প্রয়োজন, সেখানে তেমনই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কোনও ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। সামনে উৎসবের মরসুমেও কড়া পুলিশি নজরদারি চলবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement