প্রতীকী ছবি।
উদ্বেগ বাড়িয়ে করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করেছে এ রাজ্যে। দক্ষিণ দমদম, বিধাননগর এবং নিউ টাউন এলাকায় দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু তবুও মাস্ক পরা বা দূরত্ব বজায় রাখার মতো কোভিড-বিধি না মানার প্রবণতাই প্রবল ভাবে দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষদের একাংশের মধ্যে। তাই আগাম সতর্কতা হিসেবে ইতিমধ্যেই বাজার-সহ জনবহুল এলাকায় কোভিড-বিধি মেনে চলার উপরে জোর দিচ্ছে পুরসভাগুলি।
দক্ষিণ দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, সেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ১৫ থেকে ২০-র মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। উদ্বেগ বাড়িয়ে বিধাননগরেও আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। সেখানে বর্তমানে ৬০ থেকে ৮০ জন প্রতিদিন সংক্রমিত হচ্ছেন। অথচ, মাত্র কয়েক দিন আগেও বিধাননগরে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ২০-র আশপাশে। সেই তুলনায় নিউ টাউনের অবস্থা সন্তোষজনক, যদিও সেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
এই তিন পুর এলাকাতেই প্রতিষেধক নেওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চারটি কেন্দ্র থেকে দৈনিক পাঁচশোরও বেশি মানুষ প্রতিষেধক নিচ্ছেন। নিউ টাউন এবং বিধাননগরে দৈনিক প্রতিষেধক নেওয়ার সংখ্যাটা যথাক্রমে তিনশো এবং আড়াই থেকে তিন হাজার। যদিও তার পরেও এই তিন এলাকাতেই কোভিড-বিধি না মেনে চলার ছবিটা স্পষ্ট। বাজার-দোকান, রাস্তাঘাট, শপিং মল-রেস্তরাঁ থেকে শুরু করে অলিগলিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক পরার অনীহাই সব চেয়ে বেশি চোখে পড়ছে। ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে আনাজের বাজারে বিকিকিনির সেই পুরনো ছবিও ফিরে এসেছে সেখানে।
সংক্রমণ কিছুটা কমে যাওয়ায় কিছু দিন আগে সুইমিং পুল খোলার ব্যাপারে অনুমিত দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে আপাতত তা বন্ধ করা হয়েছে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর প্রবীর পাল জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে ইতিমধ্যেই পুরসভার নিজস্ব দু’টি এবং তার বাইরে তিনটি সুইমিং পুল বন্ধ করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। সংক্রমণ রুখতে সচেতনতার প্রচারের কাজে সব চেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন বাজার এবং জনবহুল এলাকায় মাইকে এবং ট্যাবলোর মাধ্যমে প্রচার চলছে। এর পাশাপাশি, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতে মাস্ক ব্যবহার করেন এবং দূরত্ব-বিধি মেনে চলেন, তা দেখার জন্য এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতিগুলিকেও বলা হয়েছে। বাজার এলাকাগুলিতে মাস্ক বিতরণও করা হয়েছে।
বিধাননগর পুরসভার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, প্রচারের পাশাপাশি এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। কোনও একটি এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা বেশি হচ্ছে কি না, সে দিকেও নজর রাখছে স্থানীয় প্রশাসন।
নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির এক কর্তা জানাচ্ছেন, সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তাই করোনার গতিপ্রকৃতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। মাস্ক পরা, দূরত্ব-বিধি যাতে বজায় রাখা হয়, তা নিশ্চিত করতে এলাকায় সচেতনতার প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে।