বিকিকিনি: রাস্তার পাশে বসেই বিক্রি করা হচ্ছে আনাজ। বুধবার, নাগেরবাজারে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
বাজার বসা এবং বাজার করা, দুই-ই চলছে দেদার। করোনা আতঙ্কেও থলি হাতে বেরোনো বাজার-বিলাসীদের পায়ে বেড়ি পরানো যাচ্ছে না নাগেরবাজারে। অথচ ওই এলাকা সংলগ্ন কাজিপাড়া, তেলিপুকুর, ভগবতী পার্ক ইতিমধ্যেই কন্টেনমেন্ট জ়োন বলে ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ওই সব এলাকায় বন্ধ রয়েছে বাজার। নাগেরবাজারের উড়ালপুলের নীচের বাজারও বন্ধ। কিন্তু উড়ালপুল পেরোতেই বাজার যে ভাবে যশোর রোডের দু’ধারে বসে গিয়েছে, তাতে মূল বাজার বন্ধ করে আদৌ কতটা লাভ হচ্ছে, সেই প্রশ্নও উঠে আসছে।
নাগেরবাজার থেকে যশোর রোড ধরে ভগবতী পার্ক পর্যন্ত ঘোষিত কন্টেনমেন্ট জ়োন। ফলে নাগেরবাজারের বড়বাজার, মিনিবাজার বন্ধ। নাগেরবাজার থেকে ভগবতী পার্ক পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারের বাজারও বন্ধ। অথচ ভগবতী পার্ক পেরোতেই সেই পরিচিত দৃশ্য। কোথাও ট্রলিতে করে বিক্রি হচ্ছে আনাজপাতি, তো কোথাও আবার রাস্তার উপরেও বসে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা বাজার। এমনকি, রাস্তার ধারেই মিলে যাচ্ছে রুই, কাতলা, পমফ্রেট-সহ হরেক রকম মাছও। সকাল থেকেই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে অসংখ্য মানুষ রীতিমতো সে সবের দরদামে ব্যস্ত। ছবি দেখে কে বলবে করোনা আতঙ্কে কাঁপছে গোটা দুনিয়া। প্রায় নাকের ডগায় কন্টেনমেন্ট জ়োন, অথচ চলছে ভিড় করে কেনাকাটা! অভিযোগ, কন্টেনমেন্ট জ়োনে থেকেও চোরাগোপ্তা পথে অনেকেই সেই বাজারে চলে যাচ্ছেন। স্থানীয় মানুষদের একটি অংশ দাবি করছেন, এই বাজারগুলি বন্ধ করা হোক। প্রয়োজনে খানিকটা দূরের বাগুইআটি বা অর্জুনপুরের বাজারে যান মানুষ। স্থানীয় এক বাসিন্দার মতে, যশোর রোডে বাজার বসায় নাগেরবাজার এলাকার মূল বাজার বন্ধ করে কোনও লাভ হচ্ছে না। অনেকেই অপ্রয়োজনেও বাজারে চলে যাচ্ছেন।
এ ক্ষেত্রে পুরসভা কী করছে? নাগরিকদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন শুধুই ব্যস্ত কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলি বন্ধ করা নিয়ে। কিন্তু এই ভিড় নিয়ন্ত্রণে কোনও ভূমিকা নেই তাদের। অন্য দিকে, কন্টেনমেন্ট জ়োনের কয়েক জন বাসিন্দার অভিযোগ, যদি এই এলাকাগুলিতে পুরসভার তরফে বাজার বা প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে ভ্রাম্যমাণ গাড়ি ঘুরত, তা হলে মানুষকে বাজারে বেরোতে হত না।
আরও পড়ুন: ২৭টি ওয়ার্ডের জল-ছবি পাল্টাতে ভূগর্ভস্থ নিকাশি
পুরসভার দাবি, তেলিপুকুর এলাকায় যেখানে ১৬ জন করোনা রোগী রয়েছেন, সেখানে প্রতিদিন তাদের তরফে টোটো করে বাজার ও জরুরি জিনিস বিক্রি করা হয়। এ দিন দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান দাবি করেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট জ়োনে বাজার বন্ধ। রাস্তার ধারে কিছু বাজার বসছে ঠিকই, কিন্তু ওখানে যাতে মানুষ ভিড় না করেন সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আমরাও নজর রাখছি। আরও নজর রাখা হবে। তবে এই পরিস্থিতিতে নিজের ও পরিবারের কথা অন্তত ভেবে মানুষকেও সচেতন থাকতে হবে।’’
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ভাসে এলাকা, জল সরতে বহু দিন