লালবাজার।—ফাইল চিত্র।
রাজ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কলকাতা-সহ বেশ কিছু পুর এলাকায় সোমবার বিকেল থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুলিশের সমস্ত কর্মীকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিল লালবাজার। শহরের বাইরে থেকে কাজে আসেন যে সব পুলিশকর্মী, করোনা-মোকাবিলায় তাঁদের সকলকে সর্বক্ষণ থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডের ব্যারাকে থাকতে বলা হয়েছে। যাতে যে কোনও পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই পুলিশকর্মীদের পাওয়া যায়।
এক পুলিশকর্তা জানান, লকডাউন শুরু হওয়ার অর্থই হল, শহর জুড়ে আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হওয়া। সেই অবস্থা সামাল দিতেই বাহিনীকে তৈরি রাখা হচ্ছে। তবে তিনি জানিয়েছেন, বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে যাতে করোনা-সংক্রমণ না ছড়ায়, সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। যে সব কর্মী বাইরে বেরিয়ে ডিউটি করছেন, তাঁরা যাতে নিজেদের পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত করে তবেই ব্যারাকে ঢোকেন, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের প্রতিটি ব্যাটেলিয়নের কর্তাদের। আলিপুরে কলকাতা পুলিশের সব চেয়ে বড় ব্যারাকটি যাতে ওই ভাইরাস-মুক্ত থাকে, সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। কাশীপুরের অষ্টম ব্যাটেলিয়নের অফিসে ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করে তবেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের থানা, ট্র্যাফিক গার্ড-সহ বিভিন্ন ইউনিটের বহু পুলিশকর্মী জেলা শহর কিংবা গ্রাম থেকে বাসে, ট্রেনে করে শহরে ডিউটি করতে আসেন। তবে লকডাউনের কারণে তাঁরা যাতে ডিউটিতে আসতে সমস্যায় না পড়েন, তাই পুলিশের শীর্ষ মহল থেকে ওই পুলিশকর্মীদের থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডে এসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্য দিকে, গত সপ্তাহে পুণে থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র ব্যাটেলিয়নের এক কর্মী। তাঁকে প্রথমে কলকাতা পুলিশ হাসপাতাল ও পরে বেলেঘাটা আইডি-তে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাঁর দেহে করোনার উপস্থিতি মেলেনি। বর্তমানে তাঁকে ঘরবন্দি থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কর্মী পুণে থেকে ফিরে আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সের অফিসে গিয়েছিলেন। বর্তমানে সেখানে লিফট ব্যবহারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার অখিলেশ চতুবের্দী জানান, বাহিনীর সদস্যদের করোনা থেকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া করোনা নিয়ে গুজব ঠেকাতে এবং সচেতনতা গড়ে তুলতে এলাকায় মাইকে ঘোষণা করতে বলা হয়েছে। সেই মতো একটি অডিয়ো বার্তাও প্রতিটি থানার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।