সতর্কতা: পার্ক সার্কাসের অবস্থান মঞ্চে আসা এক যুবকের হাতে স্যানিটাইজ়ার দিচ্ছেন এক আন্দোলনকারী। রবিবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
সচেতনতার স্বার্থে কলকাতা অচল হলে হয়তো এমনিই বন্ধ হবে প্রতিবাদ। তবে করোনা-সচেতনতার পটভূমিতে শহরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী প্রতিবাদের আসর থেকেও নানা সতর্কতার পদক্ষেপ উঠে আসতে দেখা যাচ্ছে।
রবিবার সকালে ফেসবুকে লাইভ করে পার্ক সার্কাসের মাঠ থেকেই সরব হয়েছিলেন, নাগাড়ে এই আন্দোলনে লেগে থাকা সক্রিয় যুবক মহম্মদ ইমরান। তাঁর দাবি, ‘‘যাঁরা প্রবীণ, এই মাঠে এখন তাঁদের আসা উচিত নয়। কড়া
পরিচ্ছন্নতা-বিধি মেনে চলা ছাড়াও অসম্ভব ছোঁয়াচে এই ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বিশেষ জরুরি পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা। এই অবস্থায় একান্তই আন্দোলন চালাতে হলে গুটিকয়েক প্রতিনিধিকে পর্যায়ক্রমে রেখে প্রতীকী ভাবে তা বজায় রাখলেও চলবে।’’ কৌশলগত ভাবে কিছু দিন এই আন্দোলন বন্ধ রাখার পক্ষেও অনেকে মত দিচ্ছেন। তবে এখনও পুরোপুরি আন্দোলন ওঠেনি। বরং আন্দোলনের মাঠে কী কী সতর্কতা-বিধি পালন করা হচ্ছে, তার সবিস্তার ফিরিস্তি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যেমন, ব্যবহৃত মাদুর পাল্টানো হচ্ছে। মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার সরবরাহ করা হচ্ছে। আন্দোনকারীদের মধ্যে এক মিটার দূরত্ব রাখা হচ্ছে। এক ঘণ্টা অন্তর সচেতনতার কথা প্রচার করা হচ্ছে। পার্ক সার্কাস আন্দোলনের আহ্বায়ক আসমত জামিল এখন ক্যানসারের চিকিৎসায় মুম্বইয়ে। আন্দোলনে সক্রিয় ফিরোজ় নামে এক যুবকের দাবি, দু’ঘণ্টা অন্তর হাত ধুতে বলা হচ্ছে। পার্ক সার্কাসের মাঠে একটি দিনও অনুপস্থিত থাকেননি রত্না সাহা রায়। তিনিও দাবি করেন, যথোচিত সতর্কতা মেনে চলা হচ্ছে।
রাজাবাজারের শিরিন বাগে প্রতিবাদের মাঠেও এ দিন জাফর আলম নামে এক সক্রিয় আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘প্রবীণ নাগরিক ও শিশুদের ক’টা দিন বাড়িতে রেখেই আন্দোলন করছি আমরা। মাঠে সতরঞ্জি বদলে পরিচ্ছন্নতা-বিধির উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। মাস্কও দেওয়া হচ্ছে।’’ একই সঙ্গে জনতা কার্ফুর দিনে বাড়ি থেকে একটি ভিডিয়ো করে পার্ক সার্কাসের আন্দোলনে আগাগোড়া সক্রিয় এক তরুণী বলেছেন, ‘‘ধর্মগুরুদের কাছেও আমরা দিশা চাইছি, এই বিপদে কী ভাবে চলতে হবে, তাঁরা আমাদের রাস্তা দেখান।’’
এ দিনই দিল্লির শাহিন বাগের মাঠে দেখা গিয়েছে, পোস্টার-ঢাকা মঞ্চে জুতোটুকু রেখে প্রতীকী প্রতিবাদ চলছে। এ ভাবে কোনও ছক ভাঙা পদ্ধতিতে প্রতিবাদ চালানো যায় কি না, চলছে সেই আলোচনা। শহর অবরুদ্ধ হলে বা যানবাহন না চললে ন্যূনতম সংখ্যায় প্রতিবাদীদের রেখে আন্দোলন চালু রাখার কথাও ভাবা হচ্ছে।