ফাইল চিত্র।
দিনকয়েক ধরে শহরে ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণকে আরও বাড়াবে না তো রথের ভিড়? বিধি ভেঙে রাস্তায় নেমে আমজনতার উৎসবে গা ভাসানোর পুরনো রোগ ফের বিপদ ডেকে আনবে না তো? রথের আগে এই আশঙ্কায় ভুগছেন পুলিশ থেকে চিকিৎসকদের একাংশ। চিকিৎসকদের সতর্কবার্তার পাশাপাশি আজ, শুক্রবার রথের ভিড় নিয়ন্ত্রণে একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
গত কয়েক দিন ধরে শহরে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা। রাজ্যে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার, এর মধ্যে কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। বিধি মানার অভ্যাস কার্যত ভুলতে বসা শহরবাসীর বেপরোয়া মনোভাব করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। গত বছর পার্ক স্ট্রিটে বর্ষবরণের বেপরোয়া ভিড়ের মাসুল দিতে হয়েছিল শহরবাসীকে। কারণ, তার পরেই শহরে সংক্রমণ লাগামছাড়া ভাবে বৃদ্ধি পায়। আজ, শুক্রবার রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে শহরে একাধিক শোভাযাত্রা বেরোনোর কথা। ইস্কনের রথ ঘিরে প্রতি বছরই বেশি উৎসাহ থাকে। গত দু’বছর করোনার কারণে রথের চাকা না গড়ালেও এ বছরে কোনও বাধা নেই। আর তাই সেখানেই সব থেকে বেশি ভিড় হতে পারে বলে মনে করছেন পুলিশকর্তাদের একাংশ।
এ বছর ইস্কন থেকে রথ বেরিয়ে হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিট, এ জে সি বসু রোড, শরৎ বসু রোড, হাজরা, এস পি মুখার্জি রোড, চৌরঙ্গি, এক্সাইড, জওহরলাল নেহরু রোড, উট্রাম রোড হয়ে ময়দানে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই সব রাস্তার পাশাপাশি ময়দান চত্বরেই সব থেকে বেশি ভিড়ের আশঙ্কা করছে পুলিশ। ফলে সেই ভিড়ে মুখে মাস্ক পরে থাকবেন ক’জন, আশঙ্কা থাকছেই।
বিধি না মানার এই পুরনো ‘রোগ’ ফের নতুন বিপদ ডেকে আনবে না তো? চিকিৎসক কুণাল সরকার বলছেন, ‘‘গত এক-দেড় বছরে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। তবে তাই বলে গা-ছাড়া দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এটা ঠিক, ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধের দেওয়াল অনেকটা উঁচু হয়েছে। তবু ক্রমশ ভোল পাল্টানো ভাইরাসকে কোনও সুযোগ দেওয়া চলবে না। স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও আমাদের সতর্ক থাকতেই হবে।’’
শহরে রথের ভিড় সামলাতে ইতিমধ্যেই বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। ভিড় নিয়ন্ত্রণে এবং যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আজ অতিরিক্ত প্রায় দু’হাজার পুলিশ রাস্তায় মোতায়েন থাকবে। জায়গায় জায়গায় নজরদারির দায়িত্বে রাখা হচ্ছে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকদের। প্রস্তুত থাকছে কুইক রেসপন্স টিম, উইনার্স টিমও। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও নজরদারি চলবে।
রথের শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে শহরের কয়েকটি রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হতেপারে বলেও কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সব রকম প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।করোনা-বিধি মেনেই যাতে উৎসব পালন করা হয়, সে দিকে কড়া নজরদারি থাকবে।’’