মা ও চিকিৎসকের কোলে সেই সদ্যোজাত। নিজস্ব চিত্র
করোনা নিয়ে তোলপাড় পরিস্থিতিতে এম আর বাঙুর হাসপাতালে জায়গা পেলেন না প্রসূতি। বদলে নার্সিংহোমেই সন্তান প্রসব করতে হল শিখা মণ্ডল নামে বছর পঁচিশের ওই তরুণীকে।
ঠাকুরপুকুরের কবরডাঙার বাসিন্দা গৌর মণ্ডল জানান, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী শিখাকে এম আর বাঙুর হাসপাতালের পর্যবেক্ষণেই রেখেছিলেন। এপ্রিলের গোড়ায় শিখার প্রসবের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বাঙুরে করোনার চিকিৎসা চলায় সেখানে তাঁর স্ত্রীর প্রসবের সুযোগ ছিল না। এই অবস্থার মধ্যেই গত সোমবার আচমকা শিখার গর্ভস্থ সন্তানের নড়াচড়া কমে যায়। গৌর জানান, এক পরিচিতের মাধ্যমে বেহালার পর্ণশ্রীর বাসিন্দা, স্ত্রীরোগ চিকিৎসক কৌশিক রায়চৌধুরীর সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন।
পেশায় গাড়িচালক গৌর জানান, লকডাউনে গাড়ি না মেলায় গত মঙ্গলবার স্ত্রীকে অটোয় চাপিয়ে তিনি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। শিখাকে পর্যবেক্ষণ করে কৌশিক বুঝতে পারেন দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। তখন গৌর ও শিখাকে নিজের গাড়িতে চাপিয়ে কৌশিক নিয়ে যান বেহালার একটি নার্সিংহোমে। সেখানেই শিখার প্রসব হয়। গৌর বলেন, ‘‘ডাক্তারবাবু ছেলের নাম দেন করোনাশ। লকডাউনে গাড়ি চালাতে পারছি না। হাতে টাকাপয়সা নেই। উনি আমাদের থেকে কোনও টাকা নেননি। আমরা শুধু ওষুধের খরচটুকু দিয়েছি।’’ আজ, রবিবার নার্সিংহোম থেকে স্ত্রী ও পুত্রকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা গৌরের।
কৌশিকের কথায়, ‘‘এমন একটা কঠিন পরিস্থিতিতে আমি চিকিৎসক হিসেবে আমার কর্তব্যটুকু ঠিক মতো করার চেষ্টা করেছি। জানি না কত দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’’