সতর্কতা: আপাতত জমবে না কফি হাউসের আড্ডা। শুক্রবার, কলেজ স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা সত্যিই আর থাকবে না। অন্তত কিছু দিনের জন্য। করোনাভাইরাস-আতঙ্কে আজ, শনিবার থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দরজা বন্ধ থাকবে কলেজ স্ট্রিট ও যাদবপুর কফি হাউসের।
গত কয়েক দিন ধরেই ওই দুই কফি হাউসে ভিড়টা অনেক পাতলা হয়ে এসেছিল। বিক্রিও ঠেকেছিল তলানিতে। যাদের পরিচালনায় কফি হাউস দু’টি চলে, সেই ‘ইন্ডিয়ান কফি ওয়ার্কার্স কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’-এর সম্পাদক তপনকুমার পাহাড়ি বললেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই কফি হাউসে আসছেন না। তা ছাড়া, কফি হাউসে কাছাকাছি বসে আড্ডা দেওয়াটাই রেওয়াজ। এই সময়ে এই ধরনের জমায়েত এড়িয়ে চলাটাই কাম্য। সেই কারণেই আমরা দু’টি কফি হাউসই ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
শুক্রবার বিকেলে কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসে লোকজনের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদেরও দেখা যায়নি। যে ক’জন এসেছিলেন, তাঁদেরই এক জন দেবজিৎ অধিকারী বললেন, ‘‘করোনার ভয়ে কফি হাউসে আসা প্রায় বন্ধই করে দিয়েছি। আজ কলেজ স্ট্রিটে একটু কাজ ছিল। তাই কাজ শেষ করে এক কাপ কফি খেতে এলাম।’’ দেবজিতের মতো অনেকেই দুপুরের ফাঁকা সময়ে কফি হাউসে ঢুকলেও পরে ভিড় বাড়তে পারে, এই আশঙ্কায় তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যান। কফি হাউসের এক কোণে টেবিলে একা বসে ছিলেন প্রদীপ আঢ্য নামে এক ব্যক্তি। তিনি বললেন, ‘‘আমি এসেছি ঠিকই। কিন্তু খাবার খেয়ে দ্রুত বেরিয়ে যাব। ফাঁকা টেবিল দেখেই বসেছি।’’
শুধু কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসই নয়, ওই এলাকার ফেভারিট কেবিনেও কমে গিয়েছে লোকজনের আসা-যাওয়া। এমনিতে দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত ওই দোকান ভিড়ে গমগম করে। মালিক সৈকত বড়ুয়া এ দিন বললেন, ‘‘করোনার আতঙ্ক শুরু হওয়ার পর থেকেই কমে গিয়েছে ভিড়।’’ প্রবীর সাহা নামে এক ক্রেতা বললেন, ‘‘প্রায়ই এখানে আসি। তবে আজকাল লোকজন বেশি দেখলে আর বসছি না।’’
ফেভারিট কেবিনের কাছেই বহু পুরনো সরবতের দোকান ‘প্যারামাউন্ট’। সেখানেও খদ্দের নেই বললেই চলে। যে ক’জন ছিলেন, তাঁদেরই এক জন বুসরা আসলাম। মালদহ থেকে কলকাতায় কাজে এসেছেন ওই তরুণী। তাঁর কথায়, ‘‘কলেজ স্ট্রিটে এলেই এখানে সরবত খেতে আসি। আমি নিজে ডাক্তার। তাই মাস্ক ব্যবহার করছি। ভিড়ও এড়িয়ে চলছি।’’