প্রতীকী ছবি।
করোনার মোকাবিলায় সামনের সারিতে থাকা পুলিশকর্মীদের মধ্যে আবার সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় তাঁদের পরিবারের ৪৫ বছরের কম বয়সি সদস্যদের যাতে প্রতিষেধক নিতে হয়রানির মধ্যে পড়তে না হয়, তার জন্য সচেষ্ট হয়েছে লালবাজার।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার এ বিষয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন পুলিশকর্তারা। পুলিশকর্মীদের পরিবারের ৪৫ বছরের নীচে থাকা সদস্যদের কী ভাবে প্রতিষেধক দেওয়া যাবে, সে বিষয়ে এক দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করা হবে। আগামী ১ মে থেকে ৪৫ বছরের কম বয়সি নাগরিকেরাও করোনার প্রতিষেধক নিতে পারবেন বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
এর আগে লালবাজারের তরফে পুলিশকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সিদের করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে এখনও সেই কাজ চলছে। এর মধ্যেই ৪৫ বছরের কম বয়সি সদস্যদের নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে লালবাজার। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘লালবাজার থেকে এই ব্যবস্থা নিলে কাউকে বেসরকারি জায়গায় গিয়ে করোনা প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য হয়রান হতে হবে না। বাহিনীর সদস্যদের যে ভাবে পরিকল্পনা মাফিক প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে, সে ভাবেই তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও দেওয়া হবে।’’
লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশবাহিনীর কর্মী ৩৭ হাজারের মতো। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি পুলিশকর্মী করোনার প্রথম দফার প্রতিষেধক গ্রহণ করেছেন। দ্বিতীয় দফায় প্রতিষেধক নিয়েছেন ২১ হাজারের বেশি পুলিশকর্মী বা অফিসার।
এ দিকে পুলিশকর্মীদের মধ্যে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। করোনা মোকাবিলায় সামনের সারিতে থাকা ওই যোদ্ধাদের মধ্যে ১৪৩ জন শুক্রবার পর্যন্ত নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শুধু শুক্রবারেই সংক্রমিতের সংখ্যা ২৮। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর থেকে একসঙ্গে এই প্রথম বাহিনীর এত জন সদস্য আক্রান্ত হলেন। দ্বিতীয় প্রতিষেধক নেওয়ার পরে আক্রান্ত ৩৩ জন। নিচুতলার পুলিশকর্মীদের আশঙ্কা, ভোটের ডিউটি বা মাস্কবিহীন লোক ধরতে গিয়েই তাঁরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে লালবাজার জানিয়েছে, প্রতিষেধক নেওয়ার ফলে আক্রান্তদের বড় বিপদের আশঙ্কা নেই।
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশকর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষায় ফাঁক রাখা হচ্ছে না। যে ভাবে নির্দেশিকা আসছে, সে ভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ভোটের ডিউটি হোক বা সাধারণ ডিউটি, সবাইকে মাস্ক পরে দূরত্ব মেনে চলতে বলা হয়েছে।’’
লালবাজার জানিয়েছে, বাহিনীতে কারও মধ্যে উপসর্গ দেখা দিলেই তাঁকে পৃথক করে দেওয়া হচ্ছে। লালবাজারই ওই কর্মীদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করছে। প্রতিটি থানা, ট্র্যাফিক গার্ড কিংবা বিভিন্ন ইউনিট থেকে উপসর্গ থাকা সদস্যদের নামের তালিকা লালবাজারের ওয়েলফেয়ার সেলে পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকেই পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং রিপোর্ট দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলে।