অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
পেশায় তিনি সরকারি হাসপাতালের নার্স। কাজের শেষে যাদবপুরের ভাড়াবাড়িতে ফিরতেন। কিন্তু, কয়েক দিন ধরেই প্রতিবেশীরা আপত্তি করেছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই আপত্তির কারণেই শেষমেশ ভাড়াবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হল ওই নার্সকে।
যাদবপুর ৮বি বাস স্ট্যান্ডের কাছে জামাইবাবুর সঙ্গে বাবা-মাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন ওই নার্স। অভিযোগ, ওই পরিবারকে প্রতিবেশীরা বলেন, যে হেতু মেয়ে হাসপাতালে কাজ করেন, তাই এখানে থাকা যাবে না। অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে বলা হয়। শুধু তাই নয়, থাকার শর্ত হিসাবে তাঁরা বলেন, ‘‘উকিল ডাকছি, স্ট্যাপ পেপারে লিখে দিন, কারও করোনা হলে আপনার দায়িত্ব!’’
বাড়ির মালিক থাকেন লন্ডনে। একটি বহুতল বাড়ির একটা অংশ তিনি ভাড়া দেন ওই নার্সের জামাইবাবুকে। তিনি পরিবহণ দফতরের কর্মী। ওই বহুতলেরই একটি ফ্ল্যাটে থাকেন মালিকের ভাইপো-ভাইঝি ও তাঁদের পরিবার। তাঁরাই আপত্তি জানান বলে অভিযোগ। হুমকি আসার পর বিষয়টি ওই নার্সের পরিবারের তরফে বাড়ির কেয়ারটেকারকে জানানো হয়। তিনি লন্ডনে থাকা বাড়ির মালিককে বিষয়টি জানান। তাঁর আপত্তি না থাকলেও, ওই প্রতিবেশীদের আপত্তিতে জামাইবাবুর ভাড়াবাড়ি ছাড়তে হচ্ছে নার্সকে।
আরও পড়ুন: বিকেলের তথ্য ভুল, রাজ্যে আক্রান্ত ৩৪, মৃত ৩, বললেন মুখ্যসচিব
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, কোভিড-১৯ নিয়ে উদ্বেগে হু
গত এক মাস ধরে জামাইবাবুর বাড়িতে আছেন ওই নার্স। আগে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে বদলি হয়ে কলকাতার একটি শিশু হাসপাতালে আসেন। সেই সময়েই তিনি যাদবপুরে জামাইবাবুর ভাড়াবাড়িতে ওঠেন। কেয়ারটেকারের মধ্যস্থতায় আপাতত মালিকের অন্য একটি বাড়িতে বাবা-মাকে নিয়ে উঠে যেতে হচ্ছে তাঁকে। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বার বার সকলকে বলছেন। তার পরেও এই শহরে এমনটা হবে, ভাবিনি।’’ তিনি আরও বলেন, “আপত্তি যাঁরা করছেন, তাঁদের জানিয়েছিলাম, আমি শিশু হাসপাতালে কাজ করি। সেখানে করোনা-আক্রান্ত কেউ নেই। কোনও অসুবিধা হবে না। তখন আমাদের বলা হয়, উকিল ডাকছি লিখে দিন, এখানে কারও করোনা হবে না। আর যদি হয় আপনাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমি আর বিতর্কে জড়াতে চাইছি না।’’