Coronavirus

কবে খুলবে দোহা, চিন্তায় প্রদীপেরা

মঙ্গলবার মাঝরাতে কলকাতা থেকে দোহা যাওয়ার পথে কাতার এয়ারওয়েজের বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি তাঁকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ০৪:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি

কত দিন এখানে হাতের উপরে হাত রেখে বসে থাকতে হবে, জানা নেই মহম্মদ নিয়াজ খানের।

Advertisement

মঙ্গলবার মাঝরাতে কলকাতা থেকে দোহা যাওয়ার পথে কাতার এয়ারওয়েজের বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। হাওড়ার বাসিন্দা, সদ্য বিবাহিত বছর তিরিশের এই যুবক বছর তিনেক ধরে দোহার একটি সংস্থায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করছেন। মাঝে ছুটিতে এসেছিলেন বাড়িতে।

মঙ্গলবার গিয়ে কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। নোভেল করোনাভাইরাসের দাপটে মঙ্গলবারই ভারতীয়দের দোহায় ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছে সে দেশের সরকার। তার বিন্দুবিসর্গও জানতেন না নিয়াজ। চেক-ইন কাউন্টারে টিকিট ও পাসপোর্ট দেখাতেই তাঁকে বলা হয়, যাওয়া যাবে না। নিয়াজের কথায়, ‘‘আমি যেখানে কাজ করি, সেখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়নি। এই নিষেধাজ্ঞা উঠলে তবেই তো যেতে পারব। কিন্তু এ ভাবে এখানে বেশি দিন বসে থাকলে ওখানে স্থানীয় কেউ আমার চাকরিটা পেয়ে যেতে পারে।’’ আর দিন কয়েক দেখে এ শহরেই কাজ খুঁজতে হবে বলে মনে করছেন তিনি।

Advertisement

মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ ইন্দ্রও বছর তিনেক ধরে দোহার একটি সংস্থায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করছেন। মঙ্গলবার নিয়াজের মতো তাঁকেও বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘২১ ফেব্রুয়ারি যখন কলকাতায় আসি, তখনও এতটা সমস্যা ছিল না। এখন তো শুনছি, এই ক’দিনের মধ্যে কাতারে করোনায় ২৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ। আমার ছুটিও পাওনা রয়েছে। এখন এখানে চুপচাপ বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই।’’ মাকে নিয়ে থাকেন প্রদীপ। জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে তাঁর মতো ছ’জনকে ওই বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি। ওই তালিকায় কাতার এয়ারওয়েজের ভারতীয় বিমানসেবিকা ও ইঞ্জিনিয়ারেরাও আছেন, যাঁদের দোহায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিদেশি কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে তাঁরাও যেতে পারেননি।

সল্টলেকের বাসিন্দা, ৭৭ বছরের চৈতালি ঘোষ দোহায় ছেলের কাছে গিয়ে আতান্তরে পড়েছেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গিয়ে পৌঁছেছিলেন এক মাস থাকার পরিকল্পনা নিয়ে। সঙ্গে এক মাসের ওষুধ। কিন্তু ছেলে শৈবাল আর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। এখনও সেখান থেকে উড়ান চালু আছে। এর পরে বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে? চৈতালিদেবীর মেয়ে শম্পা বসু বলেন, ‘‘মায়ের ফেরার কথা ছিল ২১ মার্চ। এখন চাইছি, মা তাড়াতাড়ি ফিরে আসুক। অনির্দিষ্ট কালের জন্য মা আটকে পড়লে ওষুধ ও ভিসা নিয়ে সমস্যা হবে।’’ ফেরার পথে যদি প্রত্যেক যাত্রীকেই ১৪ দিনের জন্য আলাদা করে রেখে দেওয়া (কোয়ারেন্টাইন) হয়, তা হলেও সমস্যায় পড়বেন বৃদ্ধা।

তবে বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সরাসরি কাতার থেকে ফেরা কোনও ভারতীয়কে আলাদা করে রাখা হবে না। যে সব ভারতীয় ১৫ ফেব্রুয়ারির পরে চিন, ইতালি, ইরান, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, স্পেন এবং জার্মানিতে গিয়েছিলেন, শুধু তাঁদেরই শুক্রবার থেকে ১৪ দিন আলাদা রাখা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement