ছবি: পিটিআই।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কলকাতার প্রতিটি থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডকে পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) কেনার নির্দেশ দিল লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, এর পাশাপাশি সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আরও যা যা প্রয়োজন, তা-ও কিনতে বলা হয়েছে থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকদের। সোমবার লালবাজারের তরফে ডিভিশনাল ডিসি-দের কাছে পাঠানো ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, মহিলা থানা বাদ দিয়ে ৭১টি থানা এবং ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকেরা যেন দ্রুত পিপিই-সহ বাকি সামগ্রী কিনে বাহিনীর হাতে তুলে দেন। আপাতত এই সব জিনিস কেনার জন্য থানাগুলি ৫০ হাজার টাকা খরচ করতে পারবে। পরে তা মিটিয়ে দেওয়া হবে লালবাজারের তরফে। পিপিই এবং অন্য সামগ্রী কেনার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করেছে থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডগুলি। এ ছাড়াও করোনা আক্রান্তকে বা করোনা সন্দেহে কোনও অসুস্থকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে দু’টি বিশেষ দল গড়া হয়েছে। ওই রোগীদের কী ভাবে নিয়ে যেতে হবে, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে দলের সদস্যদের।
পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, বিভিন্ন থানা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ভাবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। যেমন, বৌবাজার থানার অফিসারেরা তাঁদের থানায় আসা লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময়ে এবং নাকা তল্লাশির সময়ে গাড়ির চালকের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে ব্যবহার করছেন ছ’ফুট লম্বা লাঠি। সেই দূরত্বে দাঁড়িয়ে চালক বা অভিযোগকারীর সঙ্গে কথা বলছেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। কসবা থানার তরফে আবার অভিযুক্তকে থানার লক-আপে ঢোকানোর আগে স্নান করিয়ে, জীবাণুমুক্ত করে নেওয়া হচ্ছে। সংক্রমণ যাতে বাহিনীর মধ্যে ছড়িয়ে না-পড়ে, সে কারণে থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডের হাতে পর্যাপ্ত মাস্ক দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক শীর্ষ কর্তা।
আরও পড়ুন: লকডাউনের গেরোয় কি পঞ্জিকা সংস্কৃতিও
সূত্রের খবর, গত ৩ এপ্রিল বৌবাজার থানায় খবর আসে, তাদের এলাকায় ফুটপাতে এক জন জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে পড়ে আছেন। বৌবাজার থানার পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে ওই ব্যক্তিকে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পরে তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষায় জানা যায়, তিনি করোনা পজিটিভ। এর পরেই লালবাজারের তরফে প্রতিটি থানাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে অবশ্যই কলকাতা পুরসভা, লালবাজার এবং সংশ্লিষ্ট ডিসি-কে জানাতে হবে। মঙ্গলবার প্রাথমিক ভাবে সেন্ট্রাল ডিভিশনের সব থানাকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, মাস্ক এবং গ্লাভস পরা থাকলেও অসুস্থকে উদ্ধার করার সময়ে পুলিশকর্মীদের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মর্গে যে দেহ আসে, সেগুলির ময়না-তদন্তের খোঁজ নিতে যাওয়ার সময়েও পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদের পিপিই পরে যেতে বলা হয়েছে। সাধারণত কোনও ঘটনার তদন্তকারী অফিসার ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারকে মর্গে যেতে হয়। পুলিশের এক কর্তা জানান, মর্গ কার্যত সংক্রমণের আঁতুড়ঘর। সেখানে পচাগলা থেকে শুরু করে পোড়া দেহও থাকে। পুলিশের একাংশ মনে করছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাই মর্গে যাওয়ার সময়ে পুলিশকর্মী ও এসি-দের জন্য এই নির্দেশ।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)