Coronavirus

করোনা-শঙ্কায় পুলিশের রক্তদান শিবিরও স্থগিত

এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে পুরসভার শৈলেন মান্না স্টেডিয়ামে লাগাতার রক্তদান শিবির শুরু করে হাওড়া সিটি পুলিশ।

Advertisement

দেবাশিস দাশ ও শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২০ ০৬:০৫
Share:

হাওড়া সিটি পুলিশের রক্তদান শিবিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

করোনা পরিস্থিতির জেরে বন্ধ বেসরকারি উদ্যোগের রক্তদান শিবির। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাওড়া জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন শুরু করেছিল সিটি পুলিশ। কিন্তু হাসপাতাল-সুপার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে সেই আয়োজনও আপাতত স্থগিত রাখল পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে পুরসভার শৈলেন মান্না স্টেডিয়ামে লাগাতার রক্তদান শিবির শুরু করে হাওড়া সিটি পুলিশ। প্রতিটি শিবির থেকে ৫০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছিল। বুধবার পর্যন্ত চলা শিবির থেকে প্রায় ৩০০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে রক্তদান শিবির আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। হাওড়া জেলা

হাসপাতালের সঙ্গে যৌথ ভাবে শিবির হচ্ছিল। তবে এখন দেখা হচ্ছে অন্য কোনও সংস্থার সঙ্গে ফের যৌথ ভাবে রক্তদান শিবির করা যায় কি না। যদি তা সম্ভব হয়, তবে ফের চালু হবে।’’

Advertisement

প্রতি বছরই গরমের শুরুতে হাওড়া শহরে যে সব রক্তদান শিবির হয়, এ বারে সেগুলির একটিও হয়নি। উদ্যোক্তাদের দাবি, সামাজিক ব্যবধান বিধির কারণে ২৩ মার্চ লকডাউন শুরুর পর থেকে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে বেসরকারি উদ্যোগে একটিও রক্তদান শিবির আয়োজনের অনুমতি মেলেনি। সূত্রের খবর, এর ফলে হাওড়ার দু`টি সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ভাঁড়ার প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছিল।

জেলায় সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক দু’টি রয়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতাল এবং উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হাওড়া জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে প্রতি বছর গড়ে ৪০০ ইউনিট রক্ত থাকে। ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে ৫০-৬০টি শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ থেকেই করোনাভাইরাসের জেরে রক্তদান শিবির তেমন ভাবে হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিগত বছরে এই সময়ে রক্তদান শিবিরের তারিখ দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। এখন এই অবস্থা!’’

তবে শুধু প্রশাসনিক স্তরে রক্তদান শিবির করে সঙ্কট কতটা মেটানো যাবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন হাওড়ায় রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মীরা। সপ্তর্ষি বৈশ্য, অসিত চট্টোপাধ্যায়দের মতো আন্দোলনকারীদের কথায়, ‘‘সামাজিক ব্যবধান বিধি মেনেই ১৫-২০ জন দাতা নিয়ে রক্তদান শিবির আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিল বেশ কয়েকটি সংগঠন। কিন্তু প্রশাসনের ছাড়পত্র মিলছে না।’’

শিবিরের জন্য সরকারি ছাড়পত্র না মিললেও রক্তদান চালু রাখতে দাতাদের ব্লাড ব্যাঙ্কে যাতায়াতের ব্যবস্থা করছেন বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, ইচ্ছুক রক্তদাতারা যোগাযোগ করলে তাঁদের গাড়ি পাঠিয়ে হাসপাতালের শ্রীরামপুর শাখার ব্লাড ব্যাঙ্কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শুধু হাওড়া নয়, আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও অনেক রক্তদাতা যোগাযোগ করছেন বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement