ফাইল চিত্র
করোনাভাইরাসের জেরে পিছিয়ে গিয়েছে সিবিএসই ও আইসিএসই বোর্ডের পরীক্ষা। এ বার তাই ফল প্রকাশ থেকে কলেজে ভর্তি, সব নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন ওই সব পরীক্ষার্থীর অভিভাবকেরা। পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় নতুন ক্লাস বা পাঠ্যক্রমে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা। এমনকি, পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় পরীক্ষার্থীদের মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটতে পারে, সেই আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
অভিভাবকদের একাংশ জানাচ্ছেন, পরীক্ষা শেষ হলে শুধু নতুন কোনও পাঠ্যক্রমে ভর্তিই নয়, ছেলেমেয়েদের নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনাও করে ফেলেছিলেন তাঁরা। সেই সংক্রান্ত সমস্ত টিকিট এবং হোটেল বুকিং এখন বাতিল করতে হচ্ছে তাঁদের। সিবিএসই বোর্ডে দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার পড়ুয়াদের কয়েক জন জানাচ্ছে, আর মাত্র একটি পরীক্ষাই বাকি ছিল। সেটি শেষ হলেই বন্ধুদের সঙ্গে বেশ কিছু পরিকল্পনা ছিল তাদের। এখন অবশ্য সে সব পরিকল্পনাই বাতিল করতে হচ্ছে। আগামী ৩১ মার্চের পরে ফের কবে পরীক্ষার সূচি দেওয়া হবে, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে তারা। নতুন পরীক্ষা সূচির অপেক্ষায় রয়েছে আইসিএসই বোর্ডের পরীক্ষার্থীরাও।
তবে অভিভাবকদের আশ্বস্ত করে আইসিএসই স্কুলগুলির সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা রামমোহন মিশন স্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলছেন, ‘‘এটা একটা সর্বভারতীয় সঙ্কট। একটি পরীক্ষার সঙ্গে অন্য পরীক্ষার যোগ রয়েছে। সব পরীক্ষাই যখন পিছিয়ে যাচ্ছে, তাই অভিভাবকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’
তবে দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষা চলার জন্য পরীক্ষার্থীরা কতটা মনঃসংযোগ ধরে রাখতে পারবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকদের অনেকেই। এক আইসিএসই পরীক্ষার্থীর অভিভাবক পিয়ালী রায়ের কথায়, ‘‘৩০ মার্চ মেয়ের বায়োলজি পরীক্ষা ছিল। ওটা ওর প্রিয় বিষয়। কিন্তু এখন পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় ফের নতুন করে তৈরি হতে হবে। মনঃসংযোগ তো কিছুটা হলেও নড়ে গেল। এর ফলে ফল খারাপ হয়ে যাবে না তো?’’
তবে কোনও কোনও অভিভাবক আবার মনে করছেন, পরীক্ষার দিন পিছিয়ে যাওয়ায় আরও ভাল ভাবে প্রস্তুতির সুযোগ পাবে পরীক্ষার্থীরা। সুজয়বাবুও জানাচ্ছেন, তাঁর সময়ে পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়েছিল বলে প্রস্তুতিতে আরও সময় পেয়ে তাঁর সুবিধাই হয়েছিল। তিনি বলছেন, ‘‘১৯৮৪ সালের ১ নভেম্বর আমার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সির ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার দু’দিন আগে বুঝতে পারি যে আমার যেটুকু প্রস্তুতি, তাতে পাশ করব না। আরও ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় পেলে ভাল হয়।’’
কিন্তু পরীক্ষার আগের দিনই মারা যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। পরীক্ষা পিছিয়ে যায় ১৫ দিন। ফলে অতিরিক্ত কয়েকটি দিন সুযোগ পেয়ে পরীক্ষায় উতরে গিয়েছিলেন সুজয়বাবু। তাই এ বারের পরীক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, ‘‘পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশ না হয়ে আরও ভাল প্রস্তুতি নিয়ে ভাল ফল করার চেষ্টা করতে হবে।’’