Coronavirus

জীবাণু প্রতিরোধে গাড়ি ধোয়া, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক

আগামী ১৬ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ১০:০০
Share:

সাবধান: সংক্রমণ এড়াতে শহরে বহু পড়ুয়াকেই মাস্কে মুখ ঢাকতে দেখা যাচ্ছে। শনিবার, সায়েন্স সিটির কাছে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

গাড়ির হাতল প্রতিদিন জীবাণুনাশক দিয়ে ধুতে হবে। অভিভাবকেরা অবশ্যই সন্তানকে মাস্ক পরিয়ে স্কুলগাড়িতে তুলবেন।— করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এ বার এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে চলেছে শহরের স্কুলগাড়ির একাধিক সংগঠন।

Advertisement

আগামী ১৬ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিছু স্কুল পরীক্ষার পরে এমনিতেই বন্ধ রয়েছে। তবে কয়েকটি বেসরকারি স্কুল খোলা থাকছে। সেখানকার পড়ুয়াদের যাতায়াতের জন্য যে গাড়ি ব্যবহার করা হবে, সেগুলিতে প্রাথমিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখতে শনিবার বৈঠকও করেছে ‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের মধ্যে যাতে স্কুলগাড়ি থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না ছড়ায়, সে জন্য সংগঠনের সব সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

সুদীপবাবু জানান, তাঁদের সংগঠনের অধীনে প্রায় দু’হাজারটি স্কুলবাস চলে। এ দিনের বৈঠকে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, প্রতিটি বাসে হাত পরিষ্কারের জীবাণুনাশক রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। বাসে ওঠার সময়ে পড়ুয়ার হাত পরিষ্কার করতে সেটি তাদের দিতে হবে। চালক, খালাসি ও হেল্পারদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। সুদীপের কথায়, ‘‘আমরা পড়ুয়াদের মাস্ক দিতেই পারি। কিন্তু অভিভাবকেরা তা ব্যবহার করতে না-ও দিতে পারেন। তাই প্রত্যেক অভিভাবককে জানাচ্ছি তাঁরাই যেন পড়ুয়াদের মাস্ক পরিয়ে পাঠান।’’

Advertisement

গাড়ির হাতলেও থাকতে পারে জীবাণু। তাই প্রতিদিন সকালে পড়ুয়াদের তোলার আগে পুরো স্কুলগাড়ি জীবাণুনাশক দিয়ে ধুতে চালকদের নির্দেশ দিয়েছে বালি পুলকার মালিক সংগঠন। এমনকি, ধোয়ার পরেও গাড়ির হাতল বি‌শেষ ভাবে পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে। সংগঠনের তরফে মদন জানা বলেন, ‘‘শু‌ধু বাড়ি থেকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, আর পৌঁছে দেওয়াই আমাদের কাজ নয়। যত ক্ষণ পড়ুয়ারা গাড়িতে থাকছে, তাদের সুরক্ষার দিকটাও ভাবা উচিত। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্র্যাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর অধীনে থাকা ৫০০টিরও বেশি বাস চলে সল্টলেক, নিউ টাউনের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায়। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওই বাসেই অফিসে যাতায়াত করেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মীরা। সেই সব বাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কি কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে? সংগঠনের সম্পাদক হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের বাসগুলি বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার হয়ে চলে। সংশ্লিষ্ট সংস্থা যদি কোনও নির্দেশিকা দেয়, তা হলে সেটা মেনে চলব।’’

তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার বাসে আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট। তাই সেখানে গাদাগাদি করে বসে যাতায়াত করতে হয় না বলেই দাবি বাসমালিক থেকে অফিস কর্মীদের। কিন্তু শাট্ল গাড়িতে নিউ টাউন, রাজারহাট, বিমানবন্দরের দিকে অফিসে যাতায়াত করেন অসংখ্য লোক। ওই সমস্ত ছোট যাত্রিবাহী গাড়িতে কিন্তু গাদাগাদি করে বসেন অনেকেই। যদিও করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বেশি জনসমাগম করতে নিষেধ করেছে কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিভিন্ন বৈঠকে সেই কথা মনে করিয়ে বলেছেন, ‘মানুষের স্বার্থে কোনও আপস নয়।’

তা হলে করোনা পরিস্থিতিতে কি অতিরিক্ত যাত্রী তোলা বন্ধ করবে শাট্ল গাড়িগুলি? বেলুড় মঠ স্টপ থেকে মুড়াগাছা এবং দু’নম্বর জাতীয় সড়কের বালিহল্ট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ৪০টি ছোট যাত্রিবাহী গাড়ি চলাচল করে। সেই ‘নিউ ম্যাক্সি-ক্যাব ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক মিন্টু চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘গাড়িতে কখনওই অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয় না। যাঁরা গাড়িতে উঠছেন তাঁরা নিজেরাই সচেতন ভাবে মাস্ক পরছেন। আমরা চালকেরাও তাই পরছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement