সতর্ক: মাস্ক ও দস্তানা পরে বাঘের খাঁচার সামনে জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন এক কর্মী। সোমবার, চিড়িয়াখানায়। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আজ, মঙ্গলবার থেকে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে আলিপুর চিড়িয়াখানা। সোমবার বিকেলে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা জানিয়েছেন। তবে ইডেন উদ্যান, সল্টলেকের বনবিতানের মতো জায়গাগুলি বন্ধ হচ্ছে না। বনমন্ত্রী জানান, উদ্যানগুলি অনেক বড় ও খোলামেলা। সেখানে ভিড়ও চিড়িয়াখানার তুলনায় কম হয়। তাই সেগুলি বন্ধ করা হচ্ছে না। তবে সেখানকার কর্মীদের মাস্ক, দস্তানা ও স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। উদ্যানে বেড়াতে আসা লোকজনকে এক জায়গায় জড়ো হতে নিষেধ করা হবে।
বনমন্ত্রী এ দিন বলেন, আগামী ৩০ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি পুনর্বিবেচনা করবেন। তার পরেই চিড়িয়াখানা ফের খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সাম্প্রতিক অতীতে চিড়িয়াখানা এমন ভাবে বন্ধ করা হয়েছিল কি না, তা মনে করতে পারছেন না বনকর্তাদের কেউই।
চিড়িয়াখানা বন্ধ হবে কি না, তা নিয়ে এ দিন দুপুরে সল্টলেকের অরণ্য ভবনে বনকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজীববাবু। তার আগে থেকেই অবশ্য চিড়িয়াখানায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছিল। সোমবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বিভিন্ন খাঁচার সামনে, গরাদ ও জালে জীবাণুনাশক ওষুধ স্প্রে করছেন কর্মীরা। এমনকি, দর্শনার্থীদের খাঁচার সামনে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেই সরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। পশুপাখিদের খাঁচার সামনে মোতায়েন থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের মুখে মাস্ক ছিল। এমনকি, টিকিট বিক্রির সময়েও কর্মীরা মুখে মাস্ক এবং হাতে দস্তানা পরে ছিলেন। চিড়িয়াখানা চত্বরের ভিতরে বাকি কর্মীরাও মাস্ক পরে কাজ করেছেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, গত কয়েক দিন ধরেই চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেকটা কমে গিয়েছে।
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যাতে চিড়িয়াখানা চত্বরে কোথাও না-ছড়ায়, তার জন্য সমস্ত রকমের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চিড়িয়াখানা বন্ধ হলেও জীবাণুনাশক স্প্রে করা হবে।’’ তিনি জানান, এখন বাইরে থেকে যে সব গাড়ি ভিতরে ঢুকছে, সেগুলির চাকাও গেটেই জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।
পশুপাখিরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে কি? চিড়িয়াখানার চিকিৎসকদের দাবি, এখনও পর্যন্ত দেশ এবং দেশের বাইরে এই রোগে কোনও পশু বা পাখির আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি। পশু চিকিৎসক শৈবাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ভাইরাসে কোথাও পশুদের আক্রান্ত হওয়ার খবর নেই ঠিকই, তবে সতর্ক হওয়া ভাল।’’