স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।
করোনা-কালে ডিউটি করে থাকলে মিলবে অতিরিক্ত সুবিধা। ২০২৩-’২৬ শিক্ষাবর্ষে এমডি-এমএস পাঠক্রমে ভর্তির ক্ষেত্রে আচমকা এমনই বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্বাস্থ্য দফতর। তা-ও আবার বৃহস্পতিবার ভর্তির শেষ দিনের আগের দিন, অর্থাৎ বুধবার। এতেই বিস্মিত চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, বিশেষ কাউকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই কি এমন নির্দেশিকা?
সরকারি স্তরে চাকরির সময়েই এমডি-এমএস বা স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমায় ভর্তির সুযোগ মেলে চিকিৎসকদের। প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করার বিষয়ে উৎসাহ দিতে ২০১১ সালে স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, ওই সব এলাকায় কর্মরত চিকিৎসকেরা স্নাতকোত্তরে ভর্তিতে বিশেষ সুবিধা পাবেন। ২০২১ সালে রাজ্য সরকার ঘোষণা করে, একই সুবিধা পাবেন কোভিডে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরাও। সেই মতো ২০২১ ও ২০২২ সালের শুরুতে যাঁরা কোভিড হাসপাতাল বা ওয়ার্ডে ডিউটি করেছেন, তাঁরা এই সুবিধা পেয়েছিলেন। যদিও ২০২২-এর ফেব্রুয়ারি থেকে কোভিড সংক্রান্ত যাবতীয় নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে স্বাস্থ্য দফতর। এ দিকে বুধবারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত যাঁরা কোভিডের ডিউটি করেছেন, সেই সরকারি চিকিৎসকেরাও এই বিশেষ সুবিধা পাবেন।
এখানেই প্রশ্ন চিকিৎসক সংগঠনগুলির। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘এর মাধ্যমে স্বজনপোষণ প্রমাণিত হচ্ছে। ২০২২-এর ফেব্রুয়ারিতে যেখানে রাজ্যে কোভিড ওয়ার্ড বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেখানে এমন নির্দেশিকা কেন? আর সৎ উদ্দেশ্য থাকলে কাউন্সেলিংয়ের আগেই নির্দেশিকাটি জারি হত। আসলে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বিশেষ কয়েক জনকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই এই ব্যবস্থা।’’ ‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’-এর সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের আশঙ্কা, ‘‘এই নির্দেশিকার মাধ্যমে হাতে গোনা চিকিৎসককে অনৈতিক ভাবে সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হবে। শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় ওই সব চিকিৎসক যে সব হাসপাতালে কর্মরত, সেখানকার কর্তৃপক্ষও এক কথায় কোভিড ডিউটির সার্টিফিকেট দিয়ে দেবেন।’’