মাঠের বাইরে সেই নোটিস। শুক্রবার, নিউ টাউনে। নিজস্ব চিত্র।
ব্লক অ্যাসোসিয়েশনের থেকে খেলার মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়েছে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)। মাঠগুলিতে নাগরিকদের প্রবেশের সময় বেঁধে দিয়ে নোটিসও দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ১০টি ব্লকের মাঠে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে, সকালে ৫টা থেকে সাড়ে ৮টা এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ব্লকের নাগরিকেরা মাঠ ব্যবহার করতে পারবেন। তার বাইরে মাঠ ব্যবহার করতে হলে আর্থিক মূল্যের বিনিময়ে এনকেডিএ-র অনুমতি নিতে হবে। বিভিন্ন ব্লক অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, মাঠে আবাসিকদেরই নৈতিক অধিকার। এনকেডিএ তা কেড়ে নিতে চাইছে। ওই মাঠের অনেকগুলিতেই খেলার প্রশিক্ষণ চলে।
এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেনের দাবি, ‘‘নিউ টাউনের বাইরের লোকজন এসে সরকারি মাঠে অর্থের বিনিময়ে প্রশিক্ষণ কিংবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। ব্লকের বাসিন্দারা মাঠ ব্যবহার করতে পারছেন না বলে আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। তাই কোচিং এ বার এনকেডিএ পরিচালনা করবে।’’
কিন্তু নোটিসে আবাসিকদের জন্য যে সময় বরাদ্দ করা হয়েছে, তার মধ্যে স্কুলের পড়ুয়াদের মাঠে খেলার সুযোগ কোথায়? চেয়ারম্যানের দাবি, ‘‘যাঁরা নির্ধারিত সময়ের বাইরে মাঠে যেতে চাইবেন, তাঁদের এনকেডিএ থেকে বিনামূল্যেই রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে। স্থানীয় আবাসিকদের জন্য সময়ের বাধ্যবাধকতা থাকবে না। নোটিস নিয়ে যে বিতর্ক হচ্ছে, সেটা পুরনো ঘটনা।’’
এনকেডিএ জানাচ্ছে, টাকার বিনিময়ে নিউ টাউনের বাইরের কাউকে সরকারি মাঠ ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ, প্রতিযোগিতা করতে দেওয়া হবে না। উল্লেখ্য, কলকাতার যে সব মাঠে খেলার কোচিং চলে তা হয় ব্যক্তিগত পর্যায়ে। পুরসভা মাথা গলায় না বা অর্থ নেয় না বলে জানিয়েছেন পুরসভার পার্ক ও উদ্যান দফতরের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার।
আবাসিকদের একটি সংস্থা ‘নিউ টাউন ওয়েলফেয়ার ফ্রেটার্নিটি’র সাধারণ সম্পাদক সমীর গুপ্ত বলেন, ‘‘এনকেডিএ জানিয়েছে, সচিত্র পরিচয়পত্র করতে হবে। এনকেডিএ-র যা পরিকাঠামো, তাতে ব্লকের লোক বা বাইরের লোকের পার্থক্য তাঁদের নিরাপত্তাকর্মীরা ধরতে পারবেন তো? বাইরের লোককে বরং ব্লক অ্যাসোসিয়েশনই চিহ্নিত করতে পারবে।’’
কলকাতার মেয়র তথা আবাসনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘কলকাতায় কাউন্সিলরেরাই মাঠ নিয়ন্ত্রণ করেন। নিউ টাউনে সেই ব্যবস্থা নেই। এনকেডিএ নিয়ম মেনে কাজ করতে চায়। যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয়, সংস্থার সঙ্গে কথা বলব।’’