বাংলা-সহ বেশ কিছু আঞ্চলিক ভাষাকে সিবিএসই বোর্ড ‘মাইনর সাবজেক্ট’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
বাংলা-সহ বেশ কিছু আঞ্চলিক ভাষাকে সিবিএসই বোর্ড ‘মাইনর সাবজেক্ট’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অভিভাবকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, এই সিদ্ধান্ত কি পরিকল্পনামাফিক? বাংলার গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়ার কথা মাথায় রেখেই কি সেটিকে মাইনর সাবজেক্টের তালিকাভুক্ত করেছে বোর্ড?
বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশের বোর্ডের পরীক্ষার বিষয় নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি ঘিরে। প্রসঙ্গত, এ বার সিবিএসই দশম ও দ্বাদশের বোর্ডের পরীক্ষা
হবে দু’টি সিমেস্টারে। ওই দুই পরীক্ষার বিষয়গুলিকে মেজর এবং মাইনর— এই দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। দ্বাদশের প্রথম সিমেস্টারের মাইনর বিষয়গুলির পরীক্ষা
ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। সিবিএসই বোর্ড জানিয়েছে, তাদের দ্বাদশ শ্রেণিতে রয়েছে ১১৪টি বিষয়, দশম শ্রেণিতে ৭৫টি বিষয়। দু’টি মিলিয়ে মোট বিষয় ১৮৯টি। সেগুলিকেই মেজর এবং মাইনর-এ ভাগ করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, মেজর বিষয়গুলির মধ্যে ইংরেজি, অঙ্ক, হিন্দি, পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যা, ইতিহাস এমনকি হোম সায়েন্সের মতো বিষয় থাকলেও বাংলা, তামিল, তেলুগু, গুজরাতি-সহ বেশ কিছু আঞ্চলিক ভাষা ঠাঁই পেয়েছে মাইনর বিষয়ের তালিকায়।
আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, বাংলা-সহ আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব কমাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। তাঁদের আরও প্রশ্ন,
তা হলে কি ছাত্রছাত্রীদের বাংলা পড়ার প্রয়োজনীয়তা থাকল না? যদিও এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সিবিএসই বোর্ডের অধীনস্থ স্কুলগুলির অধ্যক্ষেরা।
শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্যের দাবি, “বাংলার গুরুত্ব কমানো হয়েছে, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বাংলা-সহ সমস্ত আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব একই আছে। পরীক্ষার রুটিনের সুবিধার জন্যই বিষয়গুলিকে মেজর এবং মাইনর— এই দু’ভাগে ভাগ করেছে সিবিএসই বোর্ড। যে যে বিষয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি, সেই বিষয়গুলিকে মেজর এবং যে বিষয়গুলিতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনায় কম, সেগুলিকে মাইনর-এর তালিকায় রাখা হয়েছে।
বাংলা-সহ আঞ্চলিক কিছু ভাষায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম বলে বাংলাকে মাইনর বিষয়ের তালিকায় রাখা হয়েছে।’’ ব্রততীদেবী জানান, সমাজমাধ্যমে অভিভাবকদের কিছু পোস্ট ঘিরে এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে বলে তিনি জেনেছেন। কিন্তু বাংলাকে মাইনর বিষয়ের তালিকায় রেখে তার গুরুত্ব কমানো হয়েছে, সেই ধারণা পুরোপুরি ভুল বলেই মনে করছেন তিনি। প্রায় একই কথা বলেছেন মহাদেবী বিড়লা হাইস্কুলের অধ্যক্ষা অঞ্জনা সাহা। তিনি বলেন, “পরীক্ষার্থীর সংখ্যার উপর নির্ভর করেই বিষয়গুলিকে মেজর এবং মাইনর-এ ভাগ করা হয়েছে।
কোনও ভাবেই বাংলার গুরুত্ব কমানো হয়নি। দ্বাদশ শ্রেণিতে ‘ইংলিশ ইলেক্টিভ’ বলেও একটি বিষয় আছে। সেটি যে হেতু খুব কম সংখ্যক পড়ুয়া নেয়, তাই ইংলিশ ইলেক্টিভকেও মাইনর বিষয়ের তালিকাতেই রাখা হয়েছে।’’