East West Corridor

East–West Corridor: সুড়ঙ্গে চাপা পড়া টিবিএম বার করা নিয়ে জট বাড়ছে ইস্ট-ওয়েস্টে

পরিস্থিতি এমনই যে, ‘চণ্ডী’কে খুঁড়ে বার করার আঁচ লাগতে বসেছে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৪৯
Share:

ফাইল চিত্র।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষের কপালের ভাঁজ ক্রমশ চওড়া করছে বৌবাজার। সমস্যার মূলে এ বার সেখানকার মাটির চরিত্র বদল। এই মেট্রো প্রকল্পে জোড়া সুড়ঙ্গ খননের কাজ মোটের উপরে মিটে গেলেও পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে আটকে থাকা টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘চণ্ডী’কে উদ্ধার করতে গিয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হচ্ছে নির্মাণ সংস্থা ‘কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল) কর্তৃপক্ষকে। পরিস্থিতি এমনই যে, ‘চণ্ডী’কে খুঁড়ে বার করার আঁচ লাগতে বসেছে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গে। কংক্রিটের স্তরে চাপা পড়া ওই যন্ত্র তুলে আনতে প্রায় পাহাড় ভাঙার পরিশ্রম করতে হচ্ছে কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষকে। ফলে গোটা প্রকল্প আদৌ সময়ে শেষ করা যাবে কি না, সেটা নিয়েই এখন সন্দিহান তাঁরা।

Advertisement

২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট সুড়ঙ্গ খননের সময়ে জলের স্রোতে মাটি ধুয়ে ধস নামিয়েছিল বৌবাজার এলাকার একের পর এক বাড়িতে। তার পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে ‘চণ্ডী’কে রেখে কিছুটা দূরত্বে দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়। মুখবন্ধ সুড়ঙ্গের ওই অংশে জল ভর্তি করে কার্যত সমাধিস্থ করা হয় ‘চণ্ডী’কে। এর পরে ভূগর্ভে জলের স্রোতে মাটির ধুয়ে যাওয়া ঠেকাতে তরল কংক্রিট এবং রাসায়নিকের মিশ্রণ পাইপের মাধ্যমে পাঠানো শুরু হয়। এই পদ্ধতির পোশাকি নাম ‘গ্রাউটিং’। টানা কয়েক মাস এমন চলার পরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত এলাকার মাটি অনেকটাই স্থিতিশীল হয়। এরই মধ্যে বাধা কাটিয়ে গত বছরের অক্টোবরে শিয়ালদহ পর্যন্ত পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শেষ করে দ্বিতীয় টিবিএম ‘উর্বী’।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শিয়ালদহে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ থেকে ‘উর্বী’কে তুলে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের অবশিষ্টাংশ খননের কাজে লাগানো হয়। সেই কাজও শেষ হয় কয়েক মাসে। এর পরে বাকি ছিল, ‘চণ্ডী’কে উদ্ধার করে শিয়ালদহ এবং এসপ্লানেডের দিক থেকে আসা দু’প্রান্তের পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের মাঝের সামান্য অংশ জোড়ার কাজটুকু।

Advertisement

কিন্তু, বিপত্তি বেধেছে সেখানেই। মেট্রো সূত্রের খবর, মুখবন্ধ পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে রাসায়নিক এবং তরল কংক্রিটের মিশ্রণ চুঁইয়ে ঢুকে ‘চণ্ডী’কে কংক্রিটের আস্তরণে মুড়ে ফেলেছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ ওই টিবিএম তুলে আনার জন্য ৪০ মিটার দীর্ঘ, ৮ মিটার প্রশস্ত এবং ১৭ মিটার গভীর যে গর্ত খুঁড়েছেন, সেখানে মাটির চাপে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ সরে আসছে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের দিকে।

মেট্রো সূত্রের খবর, বিষয়টি আপাতত সহনমাত্রার মধ্যে থাকলেও এই প্রবণতা উদ্বেগ বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষের। সমস্যা সামাল দিতে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গে ষড়ভুজাকৃতি খাঁচা বসানো হয়েছে ঠেকনা হিসেবে। এখন কংক্রিটের ওই আস্তরণ থেকে ‘চণ্ডী’কে উদ্ধার করাই মূল পরীক্ষা কর্তৃপক্ষের। ইস্ট- ওয়েস্ট মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মাটির আচরণে এমন বদল আগে আঁচ করা যায়নি। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ‘চণ্ডী’কে উদ্ধার করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement