রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কিলোগ্রাম কমবেশি ৫০০ টাকায়, কলকাতার বাজারে। —ফাইল চিত্র।
মাসকয়েক আগে আদার দাম গিয়ে ঠেকেছিল প্রতি কিলোগ্রাম ৪০০ টাকায়। মাঝেমধ্যেই পেঁয়াজের দামের ঝাঁঝও টের পায় মধ্যবিত্ত বাঙালি। আর আনাজের দাম আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ঊর্ধ্বমুখী হয়। এখন আদা, পেঁয়াজ, আনাজের দাম মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে। তবে মধ্যবিত্তের মাথাব্যথার বিশেষ কারণ হয়ে উঠেছে রসুন। গত কয়েক দিন ধরে কলকাতার বাজারে রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কিলোগ্রাম কমবেশি ৫০০ টাকায়। যদিও আনাজ বিক্রেতাদের আশ্বাস, দাম ইতিমধ্যে কমতে শুরু করেছে। পুরনো রসুন যা এখন বাজারে আছে, তার জোগান কম বলেই দাম বেড়ে গিয়েছে। নতুন রসুন বাজারে ঢুকতে শুরু করলেই দাম কমবে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা।
এখন শহরের বাজারে বেশির ভাগই নাসিকের পুরনো রসুন বিক্রি হচ্ছে। ‘চাষি ভেন্ডার অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রেসিডেন্ট তথা রাজ্য টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘‘এ বার কোলে মার্কেটে নাসিকের রসুন কম এসেছে। এমনিতেই অন্য আনাজের তুলনায় রসুনের চাহিদা কম। তাই নাসিক থেকে ১০ ট্রাক পেঁয়াজ এলে রসুন আসে এক ট্রাক। কিন্তু এখন ২০ ট্রাক পেঁয়াজ এলে হয়তো এক ট্রাক রসুন আসছে। নতুন রসুন আসার আগে পর্যন্ত এই পুরনো রসুন দিয়েই চালাতে হবে।’’
যদিও ইতিমধ্যেই বাজারে ঢুকতে শুরু করেছে উটির রসুন। এমনটাই জানাচ্ছেন গড়িয়াহাট বাজারের সম্পাদক তথা টাস্ক ফোর্সের সদস্য দিলীপকুমার মণ্ডল। দিলীপ বলেন, ‘‘উটির রসুন বাজারে আসতে শুরু করেছে। এর দাম খোলা বাজারে একটু কম। প্রতি কেজি ৩৫০ টাকার আশপাশে। উটির রসুনের সঙ্গে মিলবে নাগপুরের রসুনও। তার দামও কেজিপ্রতি প্রায় ৩৫০ টাকা মতো। এর পিছু পিছু আসতে শুরু করবে বাংলার রসুনও। তার দামও কম। ফলে দাম কমতে শুরু করবে কিছু দিন পর থেকেই।’’ রাজ্য টাস্ক ফোর্সের আর এক সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলের দাবি, ‘‘স্থানীয় রসুনও বাজারে আসতে শুরু করেছে। ফলে দামও কমছে।’’ এই সব রসুন সবে খেত থেকে আনা হচ্ছে বলে দাম কম হলেও সেগুলি এখনও কাঁচা অবস্থায় রয়েছে, জানাচ্ছেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘কাঁচা রসুনের দাম একটু কম হলেও এই রসুন রেখে দিলে আরও শুকিয়ে যাবে। তাতে ওজনে একটু হলেও কমে যাবে। এই সমস্যা পুরনো রসুনে নেই। তার দাম বেশি হলেও ওজন কমে না।’’ এতে মুশকিলে পড়েছেন ক্রেতারা। প্রশ্ন তুলছেন, তা হলে নতুন কিন্তু দামে কম, না কি পুরনো অথচ অগ্নিমূল্য— কোন ধরনের রসুন কিনবেন তাঁরা? মানিকতলা বাজারে এক ক্রেতার মতে, ‘‘রসুন কিনতে গিয়ে রীতিমতো ধাঁধায় পড়তে হচ্ছে।’’
যদিও আনাজ বিক্রেতাদের আশ্বাস, মাসকয়েকের মধ্যেই বাজারে ছেয়ে যাবে বাংলার রসুন। তখনই রসুনের দাম কমে কেজি প্রতি ১৫০-২০০ টাকায় চলে আসবে।