Dengue Death

উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি, কলকাতায় ফের প্রাণ গেল চার জনের, মুখে কুলুপ স্বাস্থ্যকর্তাদের

চলতি বছরে রাজ্যে ডেঙ্গির পরিস্থিতি নিয়ে মুখে কার্যত কুলুপ এঁটে বসে রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বেসরকারি সূত্রের হিসাব বলছে, এই চারটি মৃত্যু নিয়ে চলতি মরসুমে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৮।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৩৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

রাজ্যে প্রায় প্রতিদিনই ডেঙ্গিতে এক বা একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। যত দিন গড়াচ্ছে, মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ততই উদ্বেগজনক হচ্ছে। শুক্রবার এক দিনে তিন জনের মৃত্যু হল ডেঙ্গিতে। এর মধ্যে দু’জনের বয়স ত্রিশের কোঠায়। আবার, গত বুধবার ১৭ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলেও এ দিন জানা গিয়েছে।

Advertisement

যদিও, চলতি বছরে রাজ্যে ডেঙ্গির পরিস্থিতি নিয়ে মুখে কার্যত কুলুপ এঁটে বসে রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বেসরকারি সূত্রের হিসাব বলছে, এই চারটি মৃত্যু নিয়ে চলতি মরসুমে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৮। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই কমবয়সি। এ দিন যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা হলেন ফতেমা বিবি (৫৬), সঞ্জয় রায় (৩৪) ও সীমা বিশ্বাস (৩৭)। প্রথম দু’জনের মৃত্যু হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। আর সীমা মারা গিয়েছেন সল্টলেক আমরি হাসপাতালে। জানা যাচ্ছে, চলতি মরসুমে, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত প্রায় ৫০ হাজার।

সূত্রের খবর, গত বুধবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয় বারাসতের বাসিন্দা ১৭ বছরের এক কিশোরের। সংক্রমণের জেরে তার কিডনি ও লিভার, দু’টিই বিকল হয়েছিল। আবার, দিনকয়েক ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন ভাঙড়ের বাসিন্দা ফতেমা। এ দিন ভোরে তাঁকে আইডি-তে ভর্তি করা হয়। কিন্তু দ্রুত অবস্থার অবনতি হতে থাকায় দেওয়া হয় ভেন্টিলেশনে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সিভিয়ার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ছিলেন প্রৌঢ়া। তাঁর যকৃৎ বিকল হয়েছিল। বেলেঘাটার ওই হাসপাতালেই গত বৃহস্পতিবার থেকে আইসিইউ-তে ছিলেন ভাঙড়ের বাসিন্দা সঞ্জয়। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, দিন সাতেক আগে তাঁর ডেঙ্গি পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। জিরানগাছা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেই মতো ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন সঞ্জয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। তড়িঘড়ি ওই যুবককে আইডি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মারাত্মক জলশূন্যতা তৈরি হয়েছিল ওই যুবকের শরীরে। ফলে রক্তচাপ ও নাড়ির গতি মিলছিল না।

Advertisement

অন্য দিকে, প্রায় চার সপ্তাহ আমরিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন বনগাঁর বর্ধনবেড়িয়ার বাসিন্দা সীমা। তিনি ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে অন্য ব্যাক্টিরিয়াজনিত সংক্রমণে আক্রান্ত হন। সীমার শ্বাসনালি সংক্রমিত হয়ে পড়ে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। ২০ দিন এমন চলার পরে সেপসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ওই বধূ।

এ দিকে, কলকাতাতেও ডেঙ্গির সংক্রমণ কমার লক্ষণ নেই। বরং, শেষ তিন সপ্তাহের নিরিখে গত সপ্তাহে সংক্রমণ ফের বেড়েছে। এমনটাই জানাচ্ছে পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দেওয়া পরিসংখ্যান। যদিও শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’-এ ফিরহাদ হাকিম দাবি করেন, সংক্রমণের হার কমেছে। তিন সপ্তাহ আগে আক্রান্তের সংখ্যা ১১০০ জন বেড়েছিল। দু’সপ্তাহ আগে তা সামান্য কমে ৯৭৭ হয়। গত সপ্তাহে সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৭৬-এ। তবে, ম্যালেরিয়া গত বছরের তুলনায় ৩১.১ শতাংশ কমেছে বলে জানান ফিরহাদ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement