—প্রতীকী চিত্র।
প্রবল গরমে সফরের সময়ে অ্যাপ-ক্যাবচালকদের একাংশের এসি না চালানোর মানসিকতা দেখা গিয়েছে অতীতেও। এ বারও গরম পড়তেই দেখা যাচ্ছে তারই পুনরাবৃত্তি। গত কয়েক দিনে যে ভাবে রোদের তাপ বেড়েছে, তাতে সকাল ৮টার পর থেকেই অ্যাপ-ক্যাবে যাত্রায় এসি চালানোর দাবি উঠছে যাত্রীদের তরফে। কিন্তু তাঁদের বড় অংশের অভিযোগ, চালকদের অনেকে নিজে থেকে এসি চালাচ্ছেন না। এমনকি, অনেক চালক এর জন্য বাড়তি টাকাও দাবি করছেন।
উল্লেখ্য, সরকারি অ্যাপ ‘যাত্রী সাথী’ ছাড়াও কয়েকটি বেসরকারি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা গাড়ি বুক করার সময়ে এসি এবং নন-এসি গাড়ি বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাতানুকূল ক্যাবের ভাড়া ১৫-২০ টাকা বেশি পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী, বাতানুকূল ক্যাব বুক করলে চালক এসি চালাতে বাধ্য থাকবেন। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, এমন বহু ক্ষেত্রেও চালকেরা এসি চালাতে চাইছেন না।
সম্প্রতি খিদিরপুর থেকে ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি হোটেলে যাওয়ার জন্য অ্যাপ-ক্যাব বুক করেছিলেন বিপ্লব যশ। তীব্র গরমে গাড়িতে উঠে তিনি এসি চালানোর কথা বলতেই চালক বেঁকে বসেন বলে অভিযোগ। এর জন্য অতিরিক্ত ৩০ টাকা দাবি করেন। তখন ওই যাত্রী অভিযোগ জানানোর হুঁশিয়ারি দিতেই চালক নিমরাজি হয়ে বাতানুকূল যন্ত্র চালু করেন।
বিপ্লব একা নন। হাওড়া এবং কলকাতা স্টেশন থেকে যে সব যাত্রী ক্যাব বুক করছেন, তাঁদেরও একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এসি না চালানোর যুক্তি হিসাবে চালকদের একাংশের একটি হোয়াটসঅ্যাপ-বার্তা ঘুরছে যাত্রী মহলে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি চালকদের প্রাপ্য থেকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ টাকা কমিশন বাবদ কেটে নেওয়ায় চালকদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। নির্ধারিত ভাড়া দিয়েও কেন ভোগান্তির মুখে পড়তে হবে, তার উত্তর অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার তরফে মেলেনি।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডিজ়েলের দামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে কিলোমিটার পিছু ভাড়া বেঁধে দেওয়া দরকার। তা না হওয়ায় ট্রিপপিছু আয়ের ক্ষেত্রে সমতা থাকছে না।’’
এই সমস্যার সমাধানের কথা ভেবে চালু হয়েছিল ‘যাত্রী সাথী’ অ্যাপ। কিন্তু একাধিক অ্যাপ-ক্যাব সংগঠনের নেতৃত্ব জানিয়েছেন, বিমানবন্দর এবং রেল স্টেশনে ওই অ্যাপ ব্যবহারে বেশ কিছু অসুবিধা হচ্ছে। এআইটিইউসি-র ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘সরকারের তরফে যাত্রী সাথী-র প্রচার নেই। চালকেরা ওই অ্যাপ থেকে যাত্রী পান না। যাত্রীরাও গাড়ির হদিস জানতে পারেন না।’’ ভাড়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার সিএনজি চালিত ক্যাব চালু করতে উদ্যোগী হলেও সেই প্রচেষ্টাও বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি। সব মিলিয়ে গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যাত্রীদের ভোগান্তিও।