আর জি কর হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
মাস পাঁচেক আগে বদলির নির্দেশ জারি হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা বাতিল হয়েছিল। সোমবার ফের বদলির নির্দেশ জারি হতেই শুরু হয় টালবাহানা। অবশেষে মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য ভবন আরও একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেয়, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষকে এই মুহূর্তে অব্যাহতি (ডিমড রিলিজ়) দেওয়া হল।
গত মে মাসে প্রথম সন্দীপের বদলির নির্দেশিকা জারি হয়। তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অস্থি রোগ বিভাগের প্রফেসর পদে পাঠানো হয়। তাঁর জায়গায় আনা হয় উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সনৎ ঘোষকে। সনৎ কাজে যোগ দিতে আর জি করে আসেন। কিন্তু অভিযোগ, সন্দীপ বা সুপার, কেউ সে দিন অফিসে ছিলেন না। অগত্যা দীর্ঘ সময় পরে স্বাস্থ্য ভবনে ইমেল করে ‘জয়েনিং রিপোর্ট’ পাঠান সনৎ। যদিও পরের দিনই ফের নির্দেশিকা জারি করে সন্দীপকে আর জি করে পুনর্বহাল করা হয়। সোমবার ফের তাঁকে মুর্শিদাবাদে বদলির নির্দেশিকা জারি হয়। এ দিন সকালে বারাসত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায় আর জি করে যোগ দিতে এলে চিকিৎসক-পড়ুয়াদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়েন।
সোমবার রাত থেকেই সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ পড়ুয়ারা বিক্ষোভ শুরু করেন। কয়েক জন প্রাক্তনী ও বহিরাগতও ছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁরা দাবি তোলেন, সন্দীপ ঘোষকে ছাড়া হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে তাঁদের আস্থা আছে। কিন্তু তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থক ওই পড়ুয়ারা কী ভাবে সরকারের নির্দেশিকার বিরুদ্ধে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ দিন সকালেও বিক্ষোভ চলায় মানস অধ্যক্ষের অফিসে ঢুকতে পারেননি। অগত্যা সুপারের অফিসে গিয়ে বসে থাকেন। সূত্রের খবর, সন্দীপের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করে সাংসদ-চিকিৎসক শান্তনু সেন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই। দু’জনের ‘অম্লমধুর’ সম্পর্কের কথা অনেকেরই জানা।
মে মাসে বদলির নির্দেশিকা কোনও অদৃশ্য ক্ষমতাবলে বাতিল হলেও সন্দীপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নবান্নের তরফে তদন্ত করে দেখা হয়। অভিযোগের সত্যতা মেলায় মুখ্যমন্ত্রী স্পেনে যাওয়ার আগের দিনই বদলির নির্দেশিকা জারি হয়। কিন্তু এ দিন সকাল থেকেই টালবাহানা শুরু হয়। তার মধ্যেই রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক করেন শান্তনুরা। সেখানে অবশ্য সন্দীপ ছিলেন না। সকালে ১০ মিনিটের জন্য এসে চলে যান তিনি। শেষে স্বাস্থ্য ভবনের হস্তক্ষেপে মানস কাজে যোগ দেন। চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রদের একাংশ তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো-বার্তা দেন।