Dum Dum

দমদম স্টেশন থেকে বেরোলেই দুর্বিষহ রাস্তা, হাল বদলায় না বহু প্রতিশ্রুতিতেও

পরিস্থিতি এমন কেন? স্থানীয় পুর প্রশাসন সরাসরি এর দায় নিতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, আন্ডারপাস এবং রাস্তা রেল ও পূর্ত দফতরের অধীন। ওই জায়গা নিয়ে তাদের সঙ্গে দু’পক্ষের একাধিক বার আলোচনা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৪ ০৭:১৫
Share:

দমদম স্টেশন চত্বরে যত্রতত্র পড়ে রয়েছে আবর্জনা। ছবি: চন্দন বিশ্বাস।

নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত জমা জলের উপর দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের। সেখানে ভিড় এমনই যে, এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলেও প্রতি মূহূর্তে ধাক্কা খেতে হবে। কারণ, পথচারীর সংখ্যার তুলনায় হাঁটাচলার পরিসর কম। এ হেন আন্ডারপাস থেকে বেরিয়ে নাগেরবাজারের দিকে এগোতেই দেখা যায়, রাস্তার দু’ধারে বসেছে বাজার। যা ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। তার মধ্যেই চলছে রাস্তা পারাপার। সাইকেল, রিকশা, মোটরবাইক, গাড়ি এবং অসংখ্য পথচারী— সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ অবস্থা। দমদম স্টেশন থেকে দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকায় ঢোকার পথটা এখন এমনই দুর্বিষহ। বর্ষায় এই দুর্ভোগ চরমে ওঠে। অভিযোগ, অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনের আগে নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ওই জায়গার হাল ফেরানো হবে। কিন্তু তার পরে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

Advertisement

এ বারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলি নানা ধরনের পরিকল্পনার কথা জানালেও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাফ কথা, না আঁচালে তাঁদের বিশ্বাস নেই। অর্থাৎ, পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তবেই তাঁরা নিশ্চিন্ত হবেন। শুকনো প্রতিশ্রুতিতে আর তাঁদের আস্থা নেই। কিন্তু, পরিস্থিতি এমন কেন? স্থানীয় পুর প্রশাসন সরাসরি এর দায় নিতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, আন্ডারপাস এবং রাস্তা রেল ও পূর্ত দফতরের অধীন। ওই জায়গা নিয়ে তাদের সঙ্গে দু’পক্ষের একাধিক বার আলোচনা হয়েছে। সেই অনুসারে কিছু কিছু উন্নতিও হয়েছে।

তবে, রাস্তার ধারে বাজার এবং অসংখ্য হকার বসায় পরিস্থিতি যে মাঝে মাঝে নিয়ন্ত্রণে থাকছে না, সে কথা কার্যত মেনে নিচ্ছেন শাসকদলের একাংশ। আর সেখানেই বিস্তর অভিযোগ বিরোধীদের। বিজেপি নেতা গৌতম সাহা মণ্ডলের কথায়, ‘‘উন্নতির বদলে এই যন্ত্রণা আরও বেড়েছে। কারা হকারদের বসাচ্ছেন, তাতে কাদের লাভ, তা সকলেই জানেন। শাসকদলের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও কাজ হয়নি।’’ কংগ্রেস নেতা তাপস মজুমদার, বাম নেতা দেবশঙ্কর রায়চৌধুরীদের অভিযোগ, জোড়াতালি দিয়ে, কিছু রং লাগিয়ে মূল সমস্যার সমাধান হয় না। সার্বিক সমস্যার সমাধানে মাস্টার প্ল্যান দরকার।

Advertisement

শাসকদলের পাল্টা দাবি, বাম আমল থেকেই অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেছে দমদম। তৃণমূলের আমলেই বরং যেটুকু উন্নতি হওয়ার তা হয়েছে। বিরোধীরা তা দেখেও দেখতে পাচ্ছেন না। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দাবি, ওই জায়গায় বাজার ও হকার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। তবে, মানুষের রুজি-রোজগারের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কলকাতা থেকে দমদমে ঢোকার পথে এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কোনও পরিবর্তন বহুকাল দেখিনি।’’ আর এক বাসিন্দা সুস্মিত বসুর কথায়, ‘‘আন্ডারপাস-সহ সংলগ্ন এলাকার নিকাশি ব্যবস্থারও উন্নতি দরকার।’’ ভৈরব সমাদ্দার নামে এক নিত্যযাত্রীর কথায়, ‘‘প্রয়োজনে বিকল্প জায়গায় বাজার বসানো হোক।’’

সমস্যার কথা স্বীকার করলেও তৃণমূল নেতা সুকান্ত সেনশর্মার কথায়, ‘‘বর্তমানে কিছুটা হলেও অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে, মানুষের রুজি-রোজগারের কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। বিকল্প জায়গার অভাব রয়েছে। আগামী দিনে এই জায়গার অনেক পরিবর্তন ঘটবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement