চিকিৎসায় ‘গাফিলতি’, গোলমাল হাসপাতালে

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধুন্ধুমার বাধল ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালে। উত্তেজনা প্রশমনে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় লেক থানার বিশাল পুলিশবাহিনী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০২:৩৫
Share:

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়ে পুলিশকে অভিযোগ জানাচ্ছেন সংলাপের পরিজনেরা। মঙ্গলবার, ঢাকুরিয়া আমরিতে। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধুন্ধুমার বাধল ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালে। উত্তেজনা প্রশমনে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় লেক থানার বিশাল পুলিশবাহিনী।

Advertisement

পেটে ব্যথা নিয়ে ১৫ জুলাই ওই হাসপাতালে ভর্তি হন যাদবপুর বিক্রমগড়ের বাসিন্দা সংলাপ দেব (২৪)। এ দিন বিকেলে পরিবারকে জানানো হয়, সংলাপের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শরীরের অধিকাংশ অঙ্গ কাজ করছে না। হাসপাতালে পৌঁছলে পরিজনেদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বচসা বাধে। পরিজনেদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্যই সংলাপের অবস্থার এত অবনতি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, এক সময়ে হাসপাতাল ভাঙচুরের পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে তার আগেই পৌঁছে যায় লেক থানার পুলিশ।

সংলাপের বাবা নিরঞ্জন দেব জানান, তাঁর ছেলে দিল্লির এক বেসরকারি বিমান সংস্থায় কাজ করেন। ১৩ জুলাই পেটে ব্যথা হলে এইমসে দেখান সংলাপ। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে ওষুধ দেওয়ার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়ায় কিছু বিধি-নিষেধ মেনে চলার পরামর্শ দেন। বছর দেড়েক আগে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সংলাপ ঢাকুরিয়া আমরিতে এক চিকিৎসকের অধীনে সুস্থ হয়েছিলেন। নিরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘সেই চিকিৎসককে ফের দেখাতে ছেলে ১৫ জুলাই শহরে ফেরে। বিমানবন্দর থেকে সোজা আসে হাসপাতালে।’’

Advertisement

বাবার দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছিল, ওই চিকিৎসক আপাতত শহরে নেই। তাই অন্য চিকিৎসকের অধীনে সংলাপকে ভর্তি হতে হবে। নিরঞ্জনবাবুর অভিযোগ, ‘‘ছেলে যে চিকিৎসককে আগে দেখিয়েছিল, পরদিনই তাঁকে হাসপাতাল চত্বরে দেখি। উনি জানান, তিনি শহরেই ছিলেন। মিথ্যে বলে ছেলেকে কেন ভর্তি করানো হল?’’

নিরঞ্জনবাবু আরও বলেন, ‘‘১৯ জুলাই সংলাপকে ভেন্টিলেশনে দেয়। ছেলে তখনই বলেছিল, চিকিৎসা ঠিক মতো হচ্ছে না। ভেন্টিলেশনে যেন রাজি না হই। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চাপে রাজি না হয়ে উপায় ছিল না।’’ সংলাপের মেসোমশাই সুবীর বসুর বক্তব্য, ‘‘প্রথমে বলল, প্যানক্রিয়াটাইটিসের চিকিৎসা হচ্ছে। সেখান থেকে ছেলেটার এমন অবস্থা কী ভাবে হল, জানতে পারলাম না।’’ মা শম্পা দেবের বক্তব্য, ‘‘কুড়ি দিনের বেশি ছেলের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু কী রোগের চিকিৎসা হচ্ছে, ঠিক মতো জানানো হয়নি।’’

সন্ধ্যায় রোগীর পরিজনেদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নিরঞ্জনবাবুর কথায়, ‘‘আমরা যে চিকিৎসকদের নাম বলি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন।’’ যদিও হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের কনসালট্যান্ট, চিকিৎসক শাশ্বতী সিংহ গাফিলতির অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি জানান, সংলাপ প্যানক্রিয়াটাইটিস নিয়ে ভর্তি হন। একটি কিডনিও ঠিক মতো কাজ করছিল না। তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরিবারকে সময়ে সময়ে জানানোও হয়েছে। শাশ্বতী বলেন, ‘‘৪ অগস্ট থেকে আচমকাই অবস্থার আরও অবনতি হয়। রক্তচাপ কমে যায়। দু’টি কিডনিতেই সমস্যা দেখা দেয়। বাধ্য হয়েই তাঁকে ডায়ালিসিসে রাখা হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement