হাসপাতালে উৎপল সরকার। বাঁ হাত বাদ চলে গিয়েছে তাঁর। —নিজস্ব চিত্র।
ভিড়ে ঠাসা সরকারি বাস। ওই অবস্থাতেই কোনও রকমে বাসে উঠে পড়লেও, পাদানিতে দাঁড়িয়ে ঝুলছিলেন হরিদেবপুরের বাসিন্দা উৎপল কর্মকার। তার খেসারত অবশ্য তাঁকে দিতে হলে বাঁ হাত খুইয়ে। রাস্তার পাশে বাড়ির পিলারে ধাক্কা লাগায় কনুই থেঁতলে গিয়ে হাত কেটে পড়ে যায় । বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটেছে টালিগঞ্জ করুণাময়ীতে। ওই ব্যক্তি এখন এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে হরিদেবপুর থেকে হাওড়াগামী একটি সরকারি বাসে (এস-৪সি )। উৎপল সরকার হরিদেবপুরের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। ভবানীপুরে তাঁর একটি দর্জির দোকানে রয়েছে। এ দিন তিনি দোকানে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে তাঁর পরিচিতরাও ছিলেন। তাঁরা বাসের ভিতরে ঢুকতে পারলেও, উৎপলবাবু পাদানিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। করুণাময়ীর ওই এলাকায় রাস্তা খুবই সঙ্কীর্ণ হওয়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষাদর্শীদের বক্তব্য, ওই জায়গায় দিয়ে বাসটিও দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। করুণাময়ী কালীবাড়ির কাছে একটি পুরনো বাড়ির পিলারে ধাক্কা লাগে ওই ব্যক্তির বাঁ হাত। বাস গতিতে থাকায় মুহূর্তের মধ্যেই কনুই থেকে হাতের একাংশ কেটে রাস্তায় পড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী বাসযাত্রীরা জানিয়েছেন, সঙ্গে সঙ্গেই চিৎকার করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন উৎপলবাবু। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে বাস থেকে নামিয়ে অটো করে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সঙ্গে কাটা হাতটাও আনা হয় হাসপাতালে। কিন্তু হাতের কাটা অংশ থেঁতলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা আর জোড়া লাগার সম্ভাব হয়নি। পুলিশ বাসের চালককে গ্রেফতার করেছে।
আরও পড়ুন: সূত্র এক পাটি চটি, ৪০ মিনিটের মধ্যে চোর ধরল পুলিশ, উদ্ধার চোরাই মাল
বাসের বাইরে হাত রাখায় দুর্ঘটনায় হাত কেটে পড়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে একাধিক ক্ষেত্রে এমন ঘটনার নজির রয়েছে এই শহরে। নজির রয়েছে এ রাজ্যেও। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে দু’টো বাসের রেষারেষিতে এমন ঘটনা ঘটেছে। গত ফেব্রুয়ারিতেই বাসের রেষারেষির মাঝে পড়ে বাঘাযতীনে এক বৃদ্ধের হাত কাটা গিয়েছিল।
এই সেই বাস। এ ভাবেই কনুই থেকে হাত কেটে রাস্তায় পড়ে যায় ওই ব্যক্তির। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরও পড়ুন: ক্লাসে ঢুকে শিক্ষিকাকে ‘কুকথা’, অভিযুক্ত টিএমসিপি ছাত্রনেতা
বৃহস্পতিবারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। বারবার এই ধরনের ঘটনা সত্ত্বেও বাসের বেপরোয়া গতি এবং রেষারেষি থামানো যাচ্ছে না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়েরা।