bus service

Bus Service: সন্ধ্যার পরে বাস উধাও, মানুষের ভোগান্তি চলছেই

নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, দিনের বেলা বাসের জন্য অপেক্ষার সময় ৩০ মিনিটের আশপাশে থাকলেও সন্ধ্যা পেরোতেই তা হয়ে যাচ্ছে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০৮:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

জ্বালানির দামের ঠেলায় এক দিকে যেমন পণ্য পরিবহণের খরচ বৃদ্ধি পেয়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, অন্য দিকে তেমনই গণপরিবহণ কমতে থাকায় পথে বেরিয়ে নাকাল হচ্ছেন মানুষ। দিনের বেলা তবু কিছু বাসের দেখা মিললেও সন্ধ্যার পরে বাস কার্যত অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। দু’-একটি বাসের দেখা মিললেও তাতে ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

দিনকয়েক আগে রাজ্যের একাধিক জেলায় সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে ডিজ়েল। তবে কলকাতায় তা ঘটেছে বৃহস্পতিবার। লিটারপ্রতি ৩৬ পয়সা দাম বেড়ে ওই দিন কলকাতায় ডিজ়েলের দাম হয় ১০০.১৪ টাকা। কয়েক সপ্তাহ আগেই সেঞ্চুরি হাঁকানোর পরে পেট্রলের দাম ঘোরাফেরা করছে ১০৯ টাকার আশপাশে। জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রভাব আগেই পড়তে শুরু করেছে মানুষের জীবনে। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ‘‘জ্বালানির দাম বাড়ায় পণ্য পরিবহণের খরচ খুব বেড়ে গিয়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে বাজারেও।’’ বাজারের বাজেটে টান পড়ার পাশাপাশি রাস্তায় বেরিয়েও হয়রান হচ্ছেন মানুষ।

নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, দিনের বেলা বাসের জন্য অপেক্ষার সময় ৩০ মিনিটের আশপাশে থাকলেও সন্ধ্যা পেরোতেই তা হয়ে যাচ্ছে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা। রাত ৯টা পেরোলে অনেকেই বাসের আশা ছেড়ে মালবাহী গাড়ির পিছনে চড়ে বাড়ি ফিরছেন। কোভিডের আগে শহরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাত হাজার বেসরকারি বাস চললেও এখন তা দেড়-দু’হাজারে ঠেকেছে। ছুটির দিনে তা আরও কমে যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ রাসবিহারী মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘণ্টাখানেক হতে চলল, হাওড়ার বাস পাচ্ছি না। রোজই অফিস থেকে ফেরার সময়ে এই ঝামেলায় পড়তে হয়। দ্বিগুণ ভাড়া দিই, তার পরেও বাস মেলে না! ট্যাক্সি যে ডাকব, তারাও তো মিটারে যেতে চায় না।’’ ভোগান্তির কথা বললেন রুবি থেকে উল্টোডাঙা যাওয়ার বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা আশিস বিশ্বাসও। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে তো বাইপাসে বাসই থাকে না। প্রায় দিনই মালবাহী গাড়ির পিছনে ঝুঁকি নিয়ে যেতে হয়।’’ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডাকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৭-৩০ পর্যন্ত তেল বিক্রি না করে প্রতিবাদ জানান পাম্প মালিকেরাও।

Advertisement

গণপরিবহণ যে কম, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন বিভিন্ন বাসমালিক সংগঠনের নেতৃত্বও। তাঁদের যদিও দাবি, অতিমারির প্রকোপ চলায় এখনও বহু অফিস খোলেনি। রাস্তায় যাত্রী কম। তার উপরে ভাড়া না বাড়ায় লোকসানে বাস চালাতে হচ্ছে। ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’-এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জ্বালানির যা দাম, খরচই তো উঠছে না। সন্ধ্যার পরে যাত্রী না থাকায় মালিকেরা বাস চালাতে চাইছেন না।’’ খরচ না ওঠায় কয়েকটি রুটের বাস বেশি ভাড়া নিচ্ছে বলেও সাফাই দিলেন তিনি। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সভাপতি টিটু সাহার কথায়, ‘‘দিন দিন লোকসানের বহর বাড়তে থাকায় কেউই বাস চালাতে চাইছেন না। আমাদের বিকল্প জ্বালানির কথা ভাবতে বলা হচ্ছে। কিন্তু সেই পরিকাঠামোর উন্নতি না হলে তাৎক্ষণিক সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব নয়।’’

জ্বালানির দাম বৃদ্ধির জেরে জাঁতাকলে পড়া আমজনতার মুখে তাই জ্বালানির দাম কমানোর কথাই শোনা যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement