ফাইল চিত্র।
লালবাজার থেকে নবান্ন-সহ শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গার নিরাপত্তার দায়িত্ব আবার ফিরছে কমব্যাট বাহিনীর কাঁধে। এর আগে ওই বাহিনীর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ওই সমস্ত জায়গার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এই কমব্যাট বাহিনীর জওয়ানদের।
সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারের নিরাপত্তার দায়িত্বে ইতিমধ্যেই বহাল করা হয়েছে কমব্যাট বাহিনীর ১৫ জন সদস্যকে। যাঁরা সব সময়ে সেখানকার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় দেখভাল করবেন। একই সঙ্গে লর্ড সিন্হা রোডে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের (এসবি) অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বও তুলে দেওয়া হয়েছে ওই বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জওয়ানদের কাঁধে। এর আগে এই দু’জায়গায় নিরাপত্তার গুরুদায়িত্ব ন্যস্ত ছিল কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর উপরে। কার্যত এই প্রথম লালবাজারের নিরাপত্তার জন্য বহাল করা হল কমব্যাট বাহিনীকে।
সংক্রমণ দ্রুত হাতে ছড়ালেও তাঁদের করোনার পরীক্ষা ঠিক মতো করানো হচ্ছে না, সেই সঙ্গে ডিউটি নিয়ে অসন্তোষ— এই দুই কারণের জেরে গত মে মাসে কমব্যাট বাহিনীর সদস্যদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুল। সেই বিক্ষোভে প্রহৃত হন তৎকালীন ডিসি কমব্যাট। এর পরেই ওই বাহিনীর সদস্যদের করোনা পরীক্ষা করানো হয়। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪০ জন জওয়ানের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরেই কমব্যাট বাহিনীর ডিউটিতে বদল আনে লালবাজার। নবান্ন-সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গার নিরাপত্তায় থাকা ওই বাহিনীকে সরিয়ে দিয়ে তার জায়গায় মোতায়েন করা হয় সশস্ত্র বাহিনীকে। শহরের চারটি জায়গার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কুইক রেসপন্স টিমকেও (যাতে থাকেন কমব্যাট বাহিনীর জওয়ানেরাই) সরানো হয় সে সময়। এ ছাড়াও বাজারে নজরদারি চালাতে মোতায়েন করা ওই বাহিনীকে কলকাতা পুলিশের প্রতিটি ডিভিশন থেকেও তুলে নেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই বাহিনীর ২৯ জন জওয়ানকে রাজ্য পুলিশের অধীনে বিভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়। এমনকি আরও ২৪ জন জওয়ানকে বদলি করা হয় কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে।
লালবাজার জানিয়েছে, মহাকরণের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কমব্যাট বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা সে সময়ে কিছু কমানো হলেও পরে তা ফের বাড়ানো হয়েছে। একই রকম ভাবে কুইক রেসপন্স টিমের সংখ্যাও নতুন করে বাড়ানো হয়েছে। কালীঘাট এলাকায় ওই নতুন কুইক রেসপন্স টিমকে মোতায়েন করা হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা জানান, কমব্যাট বাহিনীর সদস্যরা সে সময়ে বেশি মাত্রায় আক্রান্ত হচ্ছিলেন। তাই তখন তাঁদের ডিউটি কমানো হয়েছিল। তবে এখন পরিস্থিতির বদল ঘটেছে। তা ছাড়া বর্তমানে কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ব্যাটেলিয়নের সদস্যেরাও একের পর এক আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই এ বার তাঁদের সরিয়ে কমব্যাট বাহিনীকে ফের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়ে আসা হয়েছে।
সূত্রের খবর, আগামী দিনে নবান্নেও মোতায়েন করা হবে কমব্যাট বাহিনীর জওয়ানদের। এ ছাড়া মহাকরণের কমব্যাট সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করার সঙ্গেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রয়োজন মতো এই বাহিনীকে মোতায়েন করা হবে বলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক করেছেন কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।