দুর্ঘটনা: এ ভাবেই দু’টি বাসের মাঝে আটকে গিয়েছিল ভ্যানরিকশাটি। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
পুলিশ ও প্রশাসনের শত চেষ্টা সত্ত্বেও বাসচালকদের মধ্যে রেষারেষির প্রবণতা যে কমেনি, ফের তার প্রমাণ মিলল বৃহস্পতিবার।
এ বার হাওড়ার শিবপুরগামী একটি বাস ও একটি মিনিবাসের মধ্যে রেষারেষির জেরে গুরুতর জখম হলেন এক ভ্যানরিকশা চালক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিনিবাসটিকে পাশ কাটাতে গিয়ে অন্য বাসটি পিছন থেকে এসে ওই ভ্যানরিকশায় ধাক্কা মেরে সেটিকে ঘষটে ঘষটে প্রায় ২০ ফুট দূরে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় মিনিবাসের নীচে আটকে যায় ভ্যানরিকশা ও চালকের ডান পা। ওই অবস্থায় প্রায় আধ ঘণ্টা আটকে থাকার পরে পুলিশ ও বাসযাত্রীরা মিলে বাসটিকে হেলিয়ে কোনও রকমে বার করে আনেন ওই ভ্যানচালককে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’টি বাসেরই চালক ও কন্ডাক্টরেরা পালিয়ে গিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে জেলাশাসকের বাংলো, হাওড়া পুরসভা ও হাওড়া আদালত সংলগ্ন রাস্তার মোড়ে। বঙ্কিম সেতু থেকে জেলাশাসকের বাংলোর দিকে নামার সময়ে মৌড়িগ্রাম-সল্টলেক রুটের একটি মিনিবাসের সঙ্গে রেষারেষি চলছিল ৫৫এ রুটের একটি বাসের। আনাজে বোঝাই ভ্যানরিকশা নিয়ে সেতু থেকে ওই সময়ে নামছিলেন প্রদীপ রাম নামে এক যুবক। তিনি পাইকারি বাজার থেকে আনাজ নিয়ে ফজিরবাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সল্টলেক রুটের মিনিবাসটি একটু আগে এসে রাস্তার ঠিক মাঝখানে এমন ভাবে দাঁড়ায় যাতে ডান দিক দিয়ে পিছনের বাসটি ওভারটেক করতে না পারে।
ডিএম বাংলো মোড় নামে পরিচিত ওই জায়গায় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রভাত সামন্ত। তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ দেখি, দাঁড়িয়ে থাকা মিনিবাসটির পিছনে একটি বড় বাস ভ্যানটিকে ধাক্কা মেরে ঘষটে ঘষটে এগিয়ে আসছে। এর পরে ভ্যানটি দুমড়ে মুচড়ে মিনিবাসের নীচে আটকে যায়। চালকের পা-ও আটকে যায় সেখানে।’’
৫৫এ রুটের বাসটির এক যাত্রী ডি এন সিংহ বলেন, ‘‘সেতুর উপর থেকেই দু’টি বাসের রেষারেষি হচ্ছিল। আমরা বারবার বারণ করলেও কান দেননি চালক।’’
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ঘটনার সময়ে ওই গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ট্র্যাফিক পুলিশ ছিল না। পরে খবর পেয়ে আসেন ট্র্যাফিকের পদস্থ অফিসারেরা। এর পরে সকলের চেষ্টায় মিনিবাসটিকে কাত করে ওই যুবকের ক্ষতবিক্ষত পা বার করে তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।