Bengali New Year

বৈশাখী গরমে ফাঁকা বইপাড়া, জনসংযোগে ‘না’ নেই ভোটপ্রার্থীদের

তাল কাটল বেলা গড়াতেই। একে গরম, তায় রবিবার—এই দুইয়ের দৌলতে মাস পয়লায় কার্যত ফাঁকা থাকল শহরের রাস্তাঘাট। বাজার এলাকায় দোকান সাজিয়ে পুজো হলেও ভিড় সে ভাবে চোখে পড়ল না।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:১৭
Share:

অপেক্ষা: পয়লা বৈশাখেও ক্রেতাদের দেখা নেই বইপাড়ায়। রবিবার কলেজ স্ট্রিটে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

শুনশান বইপাড়ায় গুটিকয়েক দোকান খোলা। তার মধ্যে কয়েকটি ফুল দিয়ে সাজানো। প্রায় জনমানবহীন গোটা এলাকায় যে কয়েকটি বইয়ের দোকান খোলা রয়েছে, তাদের অধিকাংশই কার্যত ফাঁকা। দোকানের ভিতরে বসে দোকানদার তপন দত্ত বললেন, ‘‘একটা সময়ে এই দিনে কলেজ স্ট্রিটে পা রাখা যেত না। চার দিক লোকে গমগম করত। আর এখন? কেউ দেখে বলবে আজ পয়লা বৈশাখ!’’

Advertisement

রবিবারের সকালে শহরের বিভিন্ন বাজারের দোকানে দোকানে হালখাতার পুজো, কাঁসর-ঘণ্টার আওয়াজ, পাড়ায় পাড়ায় শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে শোভাযাত্রা, বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মনে পড়াচ্ছিল বাংলা নববর্ষের পরিচিত ছবিটাকেই। তবে তাল কাটল বেলা গড়াতেই। একে গরম, তায় রবিবার—এই দুইয়ের দৌলতে মাস পয়লায় কার্যত ফাঁকা থাকল শহরের রাস্তাঘাট। বাজার এলাকায় দোকান সাজিয়ে পুজো হলেও ভিড় সে ভাবে চোখে পড়ল না।

যদিও ভোট-বাজারে নববর্ষের প্রথম দিনে গরমকে উপেক্ষা করে জনসংযোগের সুযোগ হাতছাড়া করেননি প্রার্থীরা। কেউ সকাল সকাল হুড খোলা গাড়িতে করে ঢাক বাজিয়ে প্রচার সারলেন, কেউ বর্ণাঢ্য মিছিল করলেন। এ দিন সকাল থেকে বেলেঘাটায় প্রচার সারেন উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। হুড খোলা গাড়িতে করে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচার চালানোর পাশাপাশি, নববর্ষের শুভেচ্ছাও বিনিময় করেন তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে। সুকিয়া স্ট্রিটে প্রচার-পর্ব সারেন ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। কখনও হুড খোলা গাড়িতে চেপে, কখনও গাড়ি থেকে নেমে প্রচার করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। নববর্ষের সকালে বেহালার জোকা এলাকায় প্রচারে বেরিয়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার সিপিএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিমও। সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ দিন প্রচার করেন তিনি।

Advertisement

প্রার্থীদের জনসংযোগ মিছিলের পাশাপাশি সকালে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে শোভাযাত্রা দেখা গিয়েছে। যাদবপুর, গাঙ্গুলিবাগান, উল্টোডাঙা, বেহালা এলাকায় নববর্ষের অনুষ্ঠান হয়। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ গাঙ্গুলিবাগান থেকে বেরিয়ে সুকান্ত সেতু পর্যন্ত মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়। হাতে বানানো বিবিধ মুখোশ নিয়ে নাচে-গানে এই পদযাত্রায় অংশ নেন কচিকাঁচা ও মহিলারা। বেহালা চৌরাস্তাতেও হয় নববর্ষের শোভাযাত্রা। সকালে ভিড় ছিল কালীঘাট মন্দিরেও। ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে পুজো দিতে আসা শ্যামবাজারের শ্যামল সাহা বললেন, ‘‘বেলার দিকে এখন যা রোদ, তাতে ১০ মিনিটও দাঁড়ানো যায় না। এ বছর তাই একটু সকালেই চলে এসেছি, কিন্তু তার পরেও লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হল।’’

যদিও বেলা বাড়তেই কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়া, শিয়ালদহ চত্বর থেকে শুরু করে বৌবাজারের সোনাপট্টি— সবই ছিল কার্যত ফাঁকা। গরম এড়াতে অনেকে আবার রেস্তরাঁ বা শপিং মলকে বেছে নিয়েছেন। বান্ধবীর সঙ্গে কসবার একটি শপিং মলে ঘুরছিলেন অভীক পাত্র। বললেন, ‘‘দু’জনে প্রথমে ঠিক করেছিলাম, একটু গঙ্গার ধারে যাব। কিন্তু যা গরম, সব পরিকল্পনা বাদ দিতে হল। এখানেই খাওয়াদাওয়া করে বাড়ি ফিরব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement