গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ এবং ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে দেশ-বিদেশের অতিথিদের সামনে এই দুই কর্মসূচির সাফল্য তুলে ধরেন তিনি। এই দুই প্রকল্পের নামে দু’টি বইও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার নবান্নের সভাঘরে প্রথমে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। দু’টি বই প্রকাশের পর সাংবাদিক বৈঠকে ‘দুয়ারে সরকার’ এবং ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচির সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের সামনে। জানান, পাঁচ দফায় দুয়ারে সরকার নাম নথিবদ্ধ করেছেন ২ কোটি ৫৫ লক্ষ মানুষ।
ঘটনাচক্রে ১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছিল দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। সেই কর্মসূচিতে মোট ১২টি প্রকল্পে নাম নথিবদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কোন প্রকল্পে কত মানুষকে এখনও পর্যন্ত সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তার পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, প্রায় ৭৭ শতাংশ আবেদনকারীকেই সংশ্লিষ্ট সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। বাকিগুলিও প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। খুব শীঘ্রই দিয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘অনেক মানুষ এখনও সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাননি। তাঁদের জন্যই দুয়ারে প্রশাসনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
‘দুয়ারে সরকার’-এর ক্যাম্পে সবচেয়ে বেশি সাড়া পড়েছে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে। এই প্রকল্পে রাজ্যের সব মানুষকে বিনা পয়সায় স্বাস্থ্যবিমার কার্ড করিয়ে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তাতে বেসরকারি হাসপাতালে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ পাওয়া যাবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্রের যে স্বাস্থ্যবিমার প্রকল্প (আয়ূষ্মান ভারত) তাতে রাজ্য সরকারকে ৪০ শতাংশ প্রিমিয়াম দিতে হয়। কেন্দ্র দেয় ৬০ শতাংশ। সেই বিমাও সবাইকে দেওয়া হয় না। কিন্তু আমরা রাজ্যের সবাইকেই বিনা পয়সায় স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করিয়ে দিচ্ছি।’’
পাড়ায় সমাধান কর্মসূচিও সাড়া ফেলেছে রাজ্যের সর্বত্র। সরকারি পরিংসংখ্যান অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ১ হাজারের বেশি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে।
রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনিসেফ। এ বার দুয়ারে সরকার ও পাড়ায় সমাধান প্রকল্পকেও আন্তর্জিতিক ক্ষেত্রে তুলে ধরার প্রয়াস নিল রাজ্য সরকার। নবান্নের অনুষ্ঠানে ছিলেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের ভারত শাখার প্রধান জুনেইদ আহমেদ, ইউনিসেফের কর্মকর্তা ইয়াসমিন হক, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা। এ ছাড়া ছিল আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম। সরকারের প্রকাশিত দু’টি বই বিভিন্ন দেশের শীর্ষ প্রশাসকদের পাঠানো হবে বলে জানান মমতা।