সল্টলেকের বনবিতানের ঝিলপাড়ে জমে রয়েছে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র।
চিত্র ১: বিশাল ঝিলের পানা পরিষ্কার করা হচ্ছে। কালো হয়ে যাওয়া জলের উপরে বাঁধা রয়েছে প্লাস্টিকের ভাঙাচোরা প্যাডেল বোট। তার ভিতরে জমে রয়েছে জল।
চিত্র-২: সেতু পেরিয়ে খানিকটা গেলেই চোখে পড়বে বড় বড় ঘাস আর আগাছা। তাতে ঢাকা পড়ে আছে সিমেন্টের তৈরি আবর্জনা ফেলার বিন। যার ভিতরে জল জমে থাকার আশঙ্কা যথেষ্ট। আর এ সবের কারণে সেখানে মশার উপদ্রব তো রয়েছেই।
এমনই পরিস্থিতি সল্টলেকের কেন্দ্রে অবস্থিত বনবিতানের। দীর্ঘ লকডাউনে বন্ধ থাকা বনবিতানের ভিতরের ঝিল সম্পূর্ণ ঢেকে গিয়েছিল কচুরিপানায়। বন দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি সেই পানা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ঝিলের বিরাট অংশ এখনও কচুরিপানায় ভরে আছে। সূত্রের খবর, ঠিকাদার সংক্রান্ত সমস্যার জেরে পানা পরিষ্কারের কাজ শুরু হতে দেরি হয়েছে। ঝিলের ওই কালো জলে ডেঙ্গির মশা জন্মাবে কি না, তা তর্কসাপেক্ষ হলেও
মশাবাহিত অন্য রোগ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বনবিতানে আসা পর্যটকেরা।
এমনিতেই ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে বিধাননগর পুরসভা। গত সোমবারই বাগুইআটি এলাকায় এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। সল্টলেকেও ডেঙ্গি হুল ফোটাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বনবিতানের চিত্রটা ভয়াবহ। ঝিলের উপরের দু’টি সেতু পেরিয়ে দেখা গেল, দু’ধারে গজিয়ে উঠেছে জঙ্গল। কেএমডিএ-র সদর দফতরের দিকের লোহার রেলিংয়ের নীচে ঝিলের একটি পাড়ে জমে প্লাস্টিক, আবর্জনা-সহ নানা জিনিস। বনবিতানের কর্মীরা দাবি করেছেন, ভিতরে মশার তেল দেওয়া হয়। কিন্তু ভিতরের বিরাট এলাকা জুড়ে গজিয়ে ওঠা জঙ্গল ও আগাছা কত দিনে পরিষ্কার করা যাবে, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কেউ কিছু জানাতে পারেননি।
বনবিতানে সারাদিনই পর্যটকেরা আসেন। প্রাতর্ভ্রমণের জন্যও আসেন বহু মানুষ। যাঁদের সিংহভাগই সল্টলেকের বাসিন্দা। তাই মশার কামড় থেকে লোকালয়ে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন তাঁদের অনেকে। বনবিতানের ভিতরটা যে মশাবাহিত রোগের আঁতুড়ঘর হয়ে আছে, তা মানছে বিধাননগর পুরসভাও। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর স্বাস্থ্য বিষয়ক সদস্য প্রণয় রায় বলেন, ‘‘জায়গাটি আমাদের নজরে রয়েছে। ছটের পরেই সেখানে মশা মারার অভিযান চালানো হবে। ডেঙ্গির মশা নোংরা জলেও ডিম পাড়ে কি না, তা নিয়ে দ্বিমত আছে। তবু আমরা ঝুঁকি নেব না।’’
অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল বিপান সুদ এ দিন বলেন, ‘‘ওই জায়গার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ চলে। তা সত্ত্বেও সমস্যা রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হবে।’’
অন্য দিকে, বনবিতান সংলগ্ন বিধাননগর মেলা চত্বরের বাইরেও বেশ কয়েকটি বন্ধ ফোয়ারা আছে। যেগুলির ভিতরে ভাল মতো জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।